৪ ঘণ্টায় রেলের সব টিকেট শেষ : হতাশায় যাত্রীরা

ঈদুল আজহা উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকেট বিক্রির প্রথম দিন শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে কমলাপুর রেলস্টেশনে সব টিকেট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। বিক্রি হয়েছে ৫ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকেট। টিকেট বিক্রি সকাল ৮টায় শুরু হলেও টিকিট প্রত্যাশীরা গত বৃহস্পতিবার থেকেই কমলাপুর স্টেশনে ভিড় করেন। অনেকে দীর্ঘ ১৮-১৯ ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে টিকেট কিনেছেন। তবে অধিকাংশ যাত্রী টিকেট না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

সকাল ৮টায় কমলাপুরসহ রাজধানীর ৬টি এবং জয়দেবপুর রেলস্টেশনের কাউন্টার, ওয়েবসাইট এবং রেলসেবা (অথরাইজড) অ্যাপে একযোগ টিকেট বিক্রি শুরু হয়। টিকিট সংগ্রহকারী অনেকেই জানিয়েছেন, তারা এসেছেন ভোর ৪টার দিকে। বেলা ১১টায় টিকিট পেয়েছেন। মোবাইল অ্যাপে টিকেট পেতে ঝামেলার কারণেই অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান। নির্ধারিত কাউন্টারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকেট বিক্রির কথা ছিল। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি করে কাউন্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। টিকেট কাটার সময় যাত্রীদের এনআইডি বা জন্ম সনদের ফটোকপি দেখাতে হচ্ছে। বিক্রি করা ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকেট ফেরত নেয়া হবে না। স্পেশাল ট্রেনের কোনো টিকেট অনলাইনে পাওয়া যাবে না। শুধু স্টেশন কাউন্টারে বিক্রি করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, রাজধানী থেকে প্রতিদিনের জন্য ২৬ হাজার ৭১৩টি আসনের টিকেট বিক্রি করা হবে। এসব টিকেটের ৫০ শতাংশ রেলস্টেশনের কাউন্টারে এবং ৫০ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

অনলাইনে টিকেট বিক্রির মাধ্যমে রেলসেবা অ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ৫০ ভাগ টিকেট অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করছি। সাড়ে ১২টার মধ্যেই পুরো টি কেট বিক্রি শেষ। এবার অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বিক্রিতে কোনো ঝামেলা হয়নি।
স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার স্বীকার করেন, যত যাত্রী টিকেটের জন্য কাউন্টারে ভিড় করেছেন, তাদের সবাইকে দেয়ার মতো টিকেট নেই। ২৬ হাজার ৭৩৯টি টিকেটের অর্ধেক অনলাইনে, আর অর্ধেক কাউন্টার থেকে বিক্রি হয়েছে। ১৩ হাজারের বেশি টিকেট দেয়া হয়েছে ৯টি স্টেশনের কাউন্টার থেকে। কমলাপুর থেকে শুধু উত্তরবঙ্গের সাতটি ট্রেনের টিকেট দেয়া হয়েছে। সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে ১৬টি কাউন্টারের সামনে টিকেট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন ছিল। তাদের অনেকে টিকেট পাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার থেকেই স্টেশনে অবস্থান করেন।
ঘাটি গেড়েছেন।

কুরবানির ঈদ আগামী ১০ জুলাই। তার আগের দুদিন শুক্র ও শনিবার। ফলে এবার ঈদযাত্রার ভিড় শুরু হবে ৭ জুলাই শেষ কর্মদিবসের পর। আজ শনিবার বিক্রি হবে ৬ জুলাইয়ের টিকেট। আগামীকাল ৩ জুলাই বিক্রি হবে ৭ জুলাইয়ের টিকেট। ৪ জুলাই বিক্রি হবে ৮ জুলাইয়ের টিকেট। ৫ জুলাই বিক্রি হবে ৯ জুলাইয়ের টিকেট। ঈদ শেষে ফিরতি যাত্রা শুরু হবে ১১ জুলাই। ১১ জুলাইয়ের যাত্রার টিকেট মিলবে ৭ জুলাই। ১২ জুলাইয়ের যাত্রার টিকেট মিলবে ৮ জুলাই। ১৩ জুলাইয়ের যাত্রার টিকেট মিলবে ৯ জুলাই। ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের যাত্রার টিকেট মিলবে ১১ জুলাই।

কমলাপুর স্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট, কমলাপুর শহরতলী প্লাটফরম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকেট দেয়া হচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট। তেজগাঁও স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকেট। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট, ফুলবাড়িয়া স্টেশন থেকে বিক্রি হচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকেট। এছাড়া গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকেট বিক্রি হচ্ছে।