আধুনিকায়ন করা হচ্ছে যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি

উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে নানা উপকরণ ও প্রযুক্তির সংযোজন ঘটানো হয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মাইকেল মধুসূদন দত্ত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে।

ইতোমধ্যে যবিপ্রবির লাইব্রেরিতে যুক্ত করা হয়েছে বেশ কিছু উন্নত প্রযুক্তির কম্পিউটার ও মেশিন। সম্প্রতি লাইব্রেরিতে বসানো হয়েছে দুটি RFID Tag সংবলিত KIOSK মেশিন । এ ধরনের ইন্টারনেট কানেক্টেড ডিভাইসে বই সার্চ করার মাধ্যমে জানা যাবে সার্চ করা বইটি লাইব্রেরিতে আছে কিনা,বইটি এভেইলেবল কিনা এবং ওই বইটির ইস্যুকারীর সংখ্যা ও বইটির সর্বমোট কপির সংখ্যা।তাছাড়া কল নাম্বার ও দেখা যাবে(এই নাম্বার অনুসারে শেলফে বই সাজানো থাকে)।

এছাড়া রয়েছে RFID সিকিউরিটি গেট যার মধ্য দিয়ে লাইব্রেরি থেকে বের হবার সময় বই ইস্যু না করে নিয়ে গেলে সংকেত প্রদান করতে সক্ষম।সম্প্রতি কোহা (KOHA) নামক অনলাইন বেসড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-শিক্ষকরা বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে লাইব্রেরিতে কি কি তথ্য আছে তা সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন এবং বই ইস্যূ-রিটার্নের কাজগুলো সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেটেড পদ্ধতিতে সম্পাদন করতে পারবেন। এছাড়াও লাইব্রেরিতে বর্তমান বইয়ের সংখ্যা মোট ১৬,১৮৫ টি ও জার্নাল সংখ্যা ৪৭২ টি।

শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড দিয়ে সেলফ চেকআউট মেশিনের মাধ্যমে বই ইস্যু করা ও ফেরত দিতে পারবে। এক্ষেত্রে বই জমা প্রদানের সময় কেউ চাইলে বইয়ের জমা রশিদ মেশিনের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবে।একজন শিক্ষার্থীকে লাইব্রেরির ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড পেতে হলে লাইব্রেরির একাউন্ট নম্বরে ১২০ টাকা প্রদান করে লাইব্রেরি ভবনের ২০৪ নং কক্ষ হতে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।কারেন্ট চলে গেলে ও বই নেওয়া যাবে সেক্ষেত্রে বইয়ের নাম ও শিক্ষার্থীর কার্ড নম্বর উল্লেখ করলে তা লাইব্রেরিতে দায়িত্বরত ব্যক্তি সেই তথ্য সংরক্ষণ করে বই প্রদান করবে।

আরো পড়ুন :
কুবিতে ৬৪ কোটির বাজেট ঘোষণা, গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি
কেশবপুরে ধারালো অস্ত্রে আঘাতে এক যুবক খুন

যবিপ্রবির গ্রন্থাগারিক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাইব্রেরিকে ঘিরে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লাইব্রেরিকে ঘিরে নানা পরিকল্পনা রয়েছে।ভবনটিতে বেশ কিছু বিভাগের পাঠদান কার্যক্রম চলছে ফলে বর্তমানে এই ভবনের পুরোটা আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। দ্বিতীয় একাডেমিক ভবনটির কাজ সম্পন্ন হলে ৫ তলা বিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবনের ১ম, ২য় ও ৩য় তলা পর্যন্ত আমরা লাইব্রেরির কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবো।বর্তমানে ভবনটির ১ম ও ২য় তলাতে লাইব্রেরির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তিনি আরও বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট পাশ হলে আমরা লাইব্রেরীতে টাইলস ও এসি লাগাবো।এছাড়া ও আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে যেমনঃবঙ্গবন্ধু কন্যা রিডিং রুম স্থাপন, স্টক রুম, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা ক্যারিয়ার কর্ণার স্থাপন (এখানে পাঠ্যবই বর্হিভূত বিসিএস, ব্যাংকজব, চাকুরীর জন্য প্রয়োজনীয় সকল বই রাখা হবে।

যেন শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়তে পারে সেজন্য সিঙ্গেল পড়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা), আলাদা পত্রিকা ও সাময়িক শাখা স্থাপন, জার্নাল শাখা, ফটোকপি শাখা, রেফারেন্স বুক কর্ণার, লাইব্রেরিকে আকর্ষণীয় করতে আধুনিক বুক শেলফ স্থাপন, লেখাপড়ার উত্তম পরিবেশ সৃষ্টি (শিক্ষার্থী অনুপাতে চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করা), সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা, পর্যাপ্ত আলো বাতাস, ভবিষ্যতে লাইব্রেরি খোলা ও বন্ধ থাকার সময় সীমা বাড়ানোসহ শিক্ষার্থী অনুপাতে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশ্বাস দেন তিনি।

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে যবিপ্রবির এই লাইব্রেরিটিতে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ১০ জন কর্মচারী ও ৬ জন অফিসারসহ একজন গ্রন্থাগারিক রয়েছে এবং এসকল উন্নত মেশিন সংযোজনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব বোর্ড থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় যার কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

জুলাই ০১,২০২২ at ২১:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ফহা/রারি