ক্ষেতলালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি পাচ্ছে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষার্থী

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে জামালগঞ্জ প্রি-ক্যাডেট ও জিয়াপুর আমিরহাট কিন্ডার গার্টেনের তিন শিক্ষার্থীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে উপবৃত্তি উত্তোলন ও অন্যান্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, আক্কেলপুর উপজেলার ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থীকে ক্ষেতলাল উপজেলার জিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে একজন ও তৃতীয় শ্রেণীতে দুই জনের শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকের যোগসাজসে কয়েক বছর যাবৎ উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে আসছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে চুড়ান্ত ভোটার তালিকাই ওই তিন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নাম আসায় এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখাগেছে, আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ প্রি-ক্যাডেটের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহী প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম ও ফাবিয়া আক্তার সুবাহ্ প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীতে ওই কিন্টার গার্টেনে অধ্যয়নরত আছেন। অপর সামিয়া জান্নাত আমিরহাট কিন্ডার গার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেনীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। ওইসব কিন্টার গার্টেন স্কুলের হাজিরা খাতায় তাদের শতভাগ উপস্থিতি পাওয়া যায়।

অপর দিকে ক্ষেতলালের জিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম ও তৃতীয় শ্রেণীর হাজিরা খাতায়ও আব্দুল্লাহ আল মাহী, ফাবিয়া আক্তার সুবাহ ও সামিয়া জান্নাতের শতভাগ উপস্থিতি পাওয়া যায়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপবৃত্তির তালিকায়ও রয়েছে ওই তিন শিক্ষার্থীর নাম, সেই টাকাও তোলেন নিয়মিত।

আরও পড়ুন:
জুডো ফেডারেশনের সহকারী কোচ হলেন জবি শিক্ষার্থী আকিব
ঝিকরগাছায় ফ্রি কম্পিউটার কোর্সের বিশেষ ক্লাস অনুষ্ঠিত

১৯ জুন রবিবার আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ প্রি-ক্যাডেট স্কুলে গিয়ে ক্লাসে পাঠদানের সময় আব্দুল্লাহ আল মাহী ও ফাবিয়া আক্তার সুবাহ্কে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহী জানান, আমি প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এই স্কুলে নিয়মিত পড়াশুনা করে আসছি। ওই স্কুলে আমি কোনদিন ক্লাস করিনি, ভর্তি আছি কি না তাও জানিনা। ওই স্কুলের পরিচালক হোসেন আলী জানান, আব্দুল্লাহ আল মাহী প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম ও ফাবিয়া আক্তার সুবাহ্ তৃতীয় শ্রেণীর নিয়মিত শিক্ষার্থী।

জিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলাকালিন সময় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন প্রধান শিক্ষক বিল মিটিং এর জন্য শিক্ষা অফিসে গেছেন। পরে সাংবাদিকদের মধ্যে যুগান্তর প্রতিনিধি তার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেলে, তিনি সাংবাদিকে জানান, আপনি আমার স্কুলে গিয়েছিলেন, আপনি এখন কোথায় আছেন ? নিউজ করেন না, আপনার সাথে স্বাক্ষাতে সব বলছি।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এফাজুল হক বলেন, করোনা কারনে বিগত সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় উপবৃত্তির জন্য ২০২১ সালের তালিকা ২২ সালে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। প্রধান শিক্ষকেরা অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের কাছে উপবৃত্তির চুড়ান্ত তালিকা পাঠায়, আমরা সেটি অনুমোদনের জন্য উপরে পাঠায়। অনিয়ম থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুন ২৬,২০২২ at ১৫:৫৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শইশ/জআ