পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবে না বিএনপি

পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের আমন্ত্রণে যাবে না বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের কথা স্পষ্ট-যারা মানুষ হত্যা করে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে পানিতে ফেলে দেয়ার কথা বলে, দেশের সম্মানীয় ব্যাক্তিদের পানিতে চুবিয়ে মারতে চায় তাদের আমন্ত্রণে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী কখনো যেতে পারে না।

বুধবার (২২ জুন) গুলশানের বিএনপির ররাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

এর আগে বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে বিএনপির সাত নেতাকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়। হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের উপসচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন। তবে যে সাতজনকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে তার মধ্যে নেই দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার নাম।

আমন্ত্রণ পাওয়া অন্য নেতারা হলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম থান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

পদ্মা সেতুর কাজ বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছিল- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকেও প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ বক্তব্য রেখেছেন। তিনি মিথ্যাচার করেছেন। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, বিএনপি-জোট সরকার তখন জাপানের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাথমিক সমীক্ষা করে। এ সময় প্রমান হিসেবে সমীক্ষার পুরো ফাইল পত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে বলে ধরে বলেন, দেয়ার আর টুলস এন্ড ডুকমেন্টস।

আরো পড়ুন :
পদ্মা সেতু উদ্বোধন: মাওয়াগামী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চলাচল ২ দিন বন্ধ
ঘটনার ৭ দিনে ও গ্রেফতার হচ্ছে না ধর্ষণ মামলার আসামি

তিনি বলেন, এতো একটা ফিজিবিলিটি রিপোর্ট অফিসিয়ালি দেয়ার পরেও কী করে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলতে পারেন যে, বিএনপি গর্ভমেন্ট আসার পর এটাকে বন্ধ করে দেয় এবং এটা কোনো কাজ করেনি। এই ফিজিবিলিটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই তারা পরবর্তিকালে কাজ করেছেন। তখনই এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও জাপান যোগাযোগ করে যে ফান্ড তার জন্য আলোচনা করা হয়েছিলো। কিন্তু সময়ের অভাবে সেটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। অথচ প্রধানমন্ত্রী সমানে বলে যাচ্ছেন বিএনপি সরকার এটা বন্ধ করে দিয়েছিলো।

মির্জা ফখরুল সমীক্ষার বিবরণী তুলে ধরেন বলেন, এই সমীক্ষার সামারীতে বলা হয়েছে যে, এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫৮ কিলো মিটার, প্র¯’ ২৫ মিটার, পাইলের সংখ্যা ২৬৮টি, নদী শাসন ১৬ দশমিক ৩০ কিলো মিটার, সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য (উভয় পার্শ্বে) ১২ দশমিক ১৬৩ কিলো মিটার, প্রকল্পের (মাওয়া-জাজিরা অব¯’ানে) ইআইআরআর ১৪ দশমিক ৮০% রেলসহ, বিসিআর ১ দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমান ৭৯০ দশমিক ৫০ হেক্টর (অধিগ্রহন-৬১৬ দশমিক ৫ হেক্টর, হুকুম দখল ১৭৪ দশমিক ০ হেক্টর), ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা ৭০সিআর ১ দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমান ৭০ থেকে ৮০ হাজার। ২০১৫ সালে মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মাতেু দিয়ে দৈনিক ২১ হাজার ৩০০ টি যানবাহন পারাপার করবে এবং ২০২৫ সালে হবে ৪১ হাজার ৬শ টি।এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০০৮ সালের অক্টোবর নাগা; শুরু এবং ২০১৩ সালের মার্চ নাগাদ শেষ হবে। এটাই পদ্মাসেতুর বিসিক। এটাকেই কেন্দ্র করে তারা পদ্মাসেতুর পরবর্তি কাজ করেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমীক্ষা অনুযায়ী মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মাসেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮৫৮৭ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা। বিস্তারিক নকশা প্রনয়ন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ ও জমি অধিগ্রহনসহ অন্যান্যা প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করার পর ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে এই সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়। এই সেতু নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় ৫৪ মাস।

এক পশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, বিএনপিতে নেতৃত্বের শূন্যতা নেই। খালেদা জিয়াই আমাদের নেতা, তার অনুপস্থিতে তারেক রহমান আমাদের নেতা। কাজেই বিএনপির প্রধানমন্ত্রী কে হবেন এর চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছেশেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারকে সরে যেতে হবে। তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

জুন ২২,২০২২ at ২২:১০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভোকা/রারি