আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হচ্ছে না পানিবন্দিদের

অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অশ্রয়কেন্দ্রেও ঠাঁই হচ্ছে না পানিবন্দিদের।

শনিবার (১৮ জুন) কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

এতে উপজেলার কুড়ার বাজার, আলীনগর, শেওলা, দুবাগ, চারখাই, তিলপাড়া, মাথিউরা, পৌরসভার কিছু অংশে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে।

কুড়ার বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান তুতা বলেন, ‘গতকাল থেকে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ শনিবার সকাল নদীর তীর উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে লোকজনকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। ‘

বৈরাগীবাজার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া আসক আলী বলেন, ‘গতকাল নদীর পানি তেমন বাড়েনি। আজ শনিবার সকাল থেকে পানি বাড়ার কারণে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের জায়গা হচ্ছে না। একটু পর পর লোকজন আসছে আশ্রয়কেন্দ্রে। ‘

আরও পড়ুন:
যশোর এ কে বিশ্বাস ড্রীম স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
পানি ঢুকেছে এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে, বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় সেবা বিঘ্নিত

বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কায় উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আপাতত দুর্যোগপীড়িত লোকজনকে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এখানকার পৌর এলাকার নয়াগ্রাম-২ ও শ্রীধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীনগরের উত্তরভাগ, সুরমা ও রামধা, চারখাইয়ের পইলগ্রাম, পাতন-১, হাজী ওয়াজিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুবাগের সিলেটিপাড়া-২ ও খাড়াভরা, শেওলার দিঘলবাক ও কোনা শালেস্বর, কুড়ার বাজারের খশির ও গড়রবন্দ, মাথিউরার দুধবকসি ও পশ্চিম মাথিউরা, তিলপাড়ার তিলপাড়া ও দাসউরা, মোল্লাপুরের মাটিকাটা ও মোল্লাপুর, মুড়িয়ার ঘুঙ্গাদিয়া ও বড়উধা, লাউতার কালাইউরা ও টিকরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর জানান, সুরমা-কুশিয়ার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিয়ানীবাজার উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে তা বৃদ্ধি করা হবে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দুর্গত এলাকার লোকজন ওঠা শুরু করেছে।

জুন ১৮,২০২২ at ২০:৪৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কক/জআ