ইনক্রিমেন্ট বন্ধের প্রতিবাদে রাবি শিক্ষকদের প্রতীকী কলম বিরতি

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের জন্য ঘোষিত ইনক্রিমেন্ট স্থগিত রাখার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতীকী কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে রাবি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই প্রতিবাদ জানান তারা।

এসময় বক্তারা বলেন, পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকে জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষেত্রে পদার্পণের দরজাস্বরূপ বিবেচনা করা হয়। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ না করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ঘোষিত ইনক্রিমেন্ট স্থগিত রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা শিক্ষার মানসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে চরমভাবে প্রভাবিত করবে।

কর্মসূচিতে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘ইনক্রিমেন্ট প্রদান আর্থিক বিষয় নয়, বরং এটি শিক্ষকদের মর্যাদার সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞান তৈরী করে তারা তাদের মেধাগুলোকে বিকশিত করছে। এ গবেষণা জাতি ও দেশ গঠনে ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকারের প্রশ্নে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে আমাদের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হয় নি।’

আরো পড়ুন :
মহানবীর সম্পর্কে কটূক্তি : দিনাজপুরে বাংলাদেশ জম’ইয়াতে হিজবুল্লাহ’র মানববন্ধধন কর্মসূচি পালন
ভাঙ্গুড়ায় আনসার ভিডিপি’র উপজেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

তিনি আরোও বলেন, ‘পিএইচডি করার জন্য শিক্ষকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে গবেষণা সম্ভব নয়। সরকার ইতিপূর্বে শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রির জন্য ইনক্রিমেন্ট দিয়ে যাচ্ছিল হঠাৎ সেটি বন্ধ করা হলো। এটি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে শিক্ষদের আর্থিক সুবিধাকেই যে শুধু বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে তা কিন্ত নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা নিয়ে আগামী দিনে যে সম্ভাবনা সেই সম্ভাবনার জায়গাটিকেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউজিসির কাছে জোর দাবি জানানো হোক, যাতে অতি দ্রুত ইউজিসি ইনক্রিমেন্ট বন্ধের ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়।’

বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক শাহেদ জামান বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারী পাকিস্তানের থেকে স্বাধীন হয়েছি। এখানে আমাদের সকল নাগরিকের প্রাপ্যটা যথাযথভাবে পাওয়ার কথা, কিন্তু আমাদের শিক্ষকদেরকেও দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নামতে হচ্ছে, এটা দুঃখজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘পিএইচডি ডিগ্রি না থাকাটাকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের যোগ্যতার ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য যে ইনক্রিমেন্টটা বরাবরই চলে আসছে, সেটা বন্ধ করা হয়েছে। কার ইঙ্গিতে এটা করা হয়েছে, আমরা জানি না। তবে শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়টা যে জাতি ভাববে না, তাদের উন্নয়ন কখনোই সুগম হবে না বলে আমি মনে করি। সরকারের প্রতি আমি অনুরোধ রাখবো, আমাদের যেনো রাজপথে নামতে না হয়, সেই ব্যবস্থা তারা করবে।’

কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড কুদরত ই জাহানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মাইনুল হক রানা, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামিম ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনা হেনা। এসময় বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

জুন ১৪,২০২২ at ১৭:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আআ/রারি