রাত পোহালেই কুমিল্লা সিটিতে নির্বাচন

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এ নির্বাচনকে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসির জন্য ‘এসিড টেস্ট’ হিসেবে দেখছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। দায়িত্ব নেয়ার পর ইসির অধীনে প্রথম এ নির্বাচন ঘিরে সারা দেশের চোখ এখন কুমিল্লার দিকে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইসি বদ্ধপরিকর বলে ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন সিইসি।

বুধবারের (১৫ জুন) এ নির্বাচনে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট, কেন্দ্রে কেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করে ভোটারদের আস্থা অর্জনে চেষ্টায় ত্রুটি রাখছেনা ইসি।

এদিকে গত ২৫ এপ্রিল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। কুমিল্লা সিটি ছাড়াও বুধবার দেশের ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), তিনটি উপজেলা ও সাতটি পৌরসভার ভোট হচ্ছে। মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে রীতিমাফিক বন্ধ রয়েছে প্রচার-প্রচারণা। এদিকে আজ মঙ্গলবার নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌছে গেছে। সবগুলো নির্বাচনই হচ্ছে ইভিএমে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু করে বিরতীহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচনের ভোট নেয়া হবে। নির্বাচনে কুমিল্লায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে ২ জন করে নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৎপর থাকবেন। রয়েছে ৩ হাজারের অধিক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী ও র‌্যাব, আর্মড ফোর্স, কোস্ট গার্ড এর সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যা যা করা প্রয়োজন, আইনের মধ্যে থেকে ইসি সব নিশ্চিত করেছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কুমিল্লায় এখনো পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। সব নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন কমিশন, ভোট কর্মী, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাই প্রস্তুত রয়েছে। এ নির্বাচন আপনাদের কাছে এসিড টেস্ট কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব নির্বাচনই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, চ্যালেঞ্জিং। সুতরাং কুসিক নির্বাচনসহ সব ভোট সুষ্ঠু করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

তিনি জানান, এবারই প্রথম প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, তাদেরকে কঠোর হাতে বিশৃঙ্খলা দমন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে কোন ধরনের গণ্ডগোল হলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া প্রয়োজনে ভোট বন্ধ করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:
চুয়েটে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
মহানবী (সা.) কে নিয়ে কুটুক্তির প্রতিবাদে ইবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ-প্রতিটি নির্বাচনই ইসির কাছে সমান গুরুত্বপূণ। কমিশন নিয়মিত সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছে, যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব না হয়। বিএনপি না থাকায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব খান বলেন, দলীয়ভাবে না থাকলেও বিএনপির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সব নির্বাচনেই লড়ছেন, কুসিকেও মেয়র পদে লড়ে যাচ্ছেন বিএনপির সাবেক এক মেয়র। এছাড়া আরো কয়েকজন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। সে হিসেবে বলা চলে নির্বাচন অংশ গ্রহণমূলক হচ্ছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচনী আইন অনুসারে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সিসি ক্যামেরা বসানো, ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক টিম নিয়োগসহ অতিরিক্ত কিছু ব্যবস্থা নেয়াও হয়েছে। তিনি জানান, কুসিকে ১০৫টি কেন্দ্রের বাইরে একটি করে এবং ৬৪০টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতে একটি করে সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে পুরো নির্বাচন মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। একজন পোলিং কর্মকর্তা তার চেয়ারে বসে যেভাবে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করবেন, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও সেভাবেই পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং সব ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা করা হবে। কোনও কেন্দ্র সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া গেলে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রার্থীদের ৯টি নির্দেশনা প্রতিপালন করতে বাধ্য করেছেন।

জুন ১৪,২০২২ at ১৭:৫৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভক/জআ