যশোরের মণিরামপুরে সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিজের ভাইবোনদের সম্পত্তি দখল করে রাখার অভিযোগ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তার আপন ভাই ও বোনেদের জমি জবর-দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তার ভাইবোনদের পক্ষ থেকে তার মেজো বোন সুফিয়া বেগম লিলি এ অভিযোগ করেন। নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে ফেতে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ করতে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অভিযোগে সুফিয়া বেগম লিলি জানান, ‘রোহিতা বাজারের পাশে তার বাবার বাড়ি। তার বাবা আবুল হোসেন এলাকার সবার কাছে ভদ্র ও ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার আগে তার ১৪ একর জমির মধ্য থেকে তার বড় ছেলে মিজানুর রহমানের নামে ৫৮৯ শতক, ছোট ছেলে মাসুদুর রহমানের নামে ৩৭৫ ও তিনি মেয়ে আবেদা বেগম, সুফিয়া বেগম ও তহমিনা বেগমের নামে ২৮৮ শতক জমি দলিল করে দেন। তার বৃদ্ধ বাবার উপর চাপ প্রয়োগ করে দলিল করার সময় মিজানুর রহমান জোর করে সবার থেকে সেই সময় সব ভাইবোনদের থেকে বেশি জমি রেষ্ট্রি করেন নেন।

এছাড়াও তার বাবার নামে এখনো ৫৯ শতক জমি রয়েছে। মিজানুর রহমান ওই ৫৯ শতক জমি দখল করে রেখেছেন। তাছাড়াও বোনেদের নামে বাবার দেয়া দলিল করা ২৮৮ শতক জমিও তিনি ভোগ করতে দিচ্ছেন না। জবর-দখল করে রেখেছেন। বোনেরা জমি নিতে গেলে তিনি সন্ত্রাসীদের নিয়ে বোন ও ভাগ্নেদের উপর হামলা চালান। প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। মিজানুর রহমানের ভয়ে বোন ও ভাগ্নেরা তার বাবার বাড়ি থাকতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের বতসবাড়ি বাজারের সাথেই। সেখানে তিন বোনের ২১ শতক জায়গা রয়েছে। ওই জমিতে তিনবোন আলাদাভাবে বাস করার জন্য আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। ওই ঘরের কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। বাকি কাজ শুরু করলে তাদের উপর মিজানুর রহমান, তার বড় ছেলে রেজওয়ান আসিফার জ্যামিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালায়। মিজানুর রহমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই অনৈতিক কাজের মদদ দিচ্ছেন মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল।

আরো পড়ুন:
বন্ধুদের সঙ্গে বান্দরবানে ঘুরতে গিয়ে তরুণীর মৃত্যু
শিশু হত্যার দায়ে গরু থানায় বন্দি

তাদের উচ্ছেদ করার জন্য শহীদ ইকবাল একাধিকবার মণিরামপুর ও আশেপাশের এলাকা থেকে সন্ত্রাসী পাঠিয়ে হুমকিও দিয়েছেন। গত ৭ জুন তাদের বাড়িতে কাজ চলা অবস্থায় মিজানুর রহমান তার ও বড় ছেলে রেজওয়ান আসিফার জ্যামিনের, সন্ত্রাসী বেলাল হোসেন, মনি হোসেনসহ সন্ত্রাসীরা হামলা করে বাড়িঘর ভাংচুর করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ও তার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসলে তারা সবাই ছোট ভাই মাসুদুর রহমানের বাড়িতে পালিয়ে যান। তার বাড়ি একটি বড় অংশ ভেঙ্গে দিয়েছে ওই সন্ত্রাসীরা। ইট-পাথর নিক্ষেপ করে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে আঘাত করে।’

তিনি আরো জানান, ‘তার ছোট ভাই মাসুদুর রহমান কিছুদিন আগে ওই মিজানুর রহমানের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তার ছোট ভাইয়ের তিন মেয়ে, ছেলে নেই। মিজানুর রহমান সেইজন্য তার নামের দলিল করা জমিও দখল করে রেখেছেন। কিন্তু তার ছোট ভাই জীবিত থাকা অবস্থায় তার মেয়েদের নামে জমি ও ভিটাবাড়ি দলিল করে দিয়েছেন। তার ভাইবোনদের মিজানুর রহমান সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে জম্মি করে রেখেছেন। সবার জমিও দখল করে রেখেছেন। মিজানুর রহমানের অত্যাচার-নির্যাতন, হুমকি-ধামকি ও সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।’

জুন ৮,২০২২ at ২১:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রআ/জআ