আরো ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পি কে হালদার

পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে আরো ১৪ দিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালত। পিকে হালদার এই দিন আদালতে তিনি শিব শংকর হালদার পরিচয় দিয়ে ভারতে অবস্থানের বিষয়টি স্বীকার করেন।

মঙ্গলবার (৭ জুন) পিকে হালদারের ভাই প্রানেশ কুমার হালদারের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে তা বাতিল করেন আদালত। আগামী ২১ জুন পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, দুবাই সিঙ্গাপুর, গ্রানাডাসহ একাধিক দেশে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন পিকে হালদার। ভারতবর্ষে সাড়ে তিনশো কোটি টাকাসহ বাংলাদেশ থেকে মোট ৬০ হাজার কোটি টাকা পি কে হালদার তার আত্মীয়-স্বজন এদের মাধ্যমে পাচার করেছেন। পিকে হালদার এবং যাদের মাধ্যমে টাকা পাচার করত তারা সকলেই বাংলাদেশী সব মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত ৮৮ ব্যাংক একাউন্টের হদিস পেয়েছে ইডি। জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় জেরা জারি ইডির। জেরায় প্রতিদিনের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে আর সে কারণেই ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এ সময় ইডি জেলে ঢুকে জেরা করতে পারবে।

পি কে হালদারসহ ছয়জন অভিযুক্তকে ১১ দিনের জেল হেফাজত শেষে মঙ্গলবার ফের তাদের আদালতে তোলা হয়। সকাল ১২টার দিকে অভিযুক্ত আসামিদের কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। ইডির পক্ষ থেকে এ সময় অভিযুক্তদের ফের জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয়।

গত ১৪ মে অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের জায়গায় অভিযান চালিয়ে পি কে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার ও আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে গ্রেপ্তার ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরপর দুই দফায় মোট ১৩ দিন ইডি রিমান্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। এসময় নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তাদের হদিস পায় ইডি।

আরো পড়ুন:
চোখে জল, স্বজনের সন্ধান পেতে তারা দিচ্ছেন ডিএনএ নমুনা
ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

১৩ দিনের ইডি রিমান্ড শেষে গত ২৭ মে আদালত তাদের ১১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এই পর্বে কারাগার গিয়েও পিকে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বহু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে রেকর্ড করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের ওই বয়ানও, যদিও তদন্তের স্বার্থে কোন ইডি কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কিছুই বলতে রাজি হয়নি।

পিকে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডির কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে যে, শুধু অশোকনগর বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা গোটা ভারত জুড়ে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল। তাদেরকে জেরা করে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তিরও হদিস পাওয়া গেছে। অর্থ আত্মসাতের একটা বিশাল অংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে আবাসন খাতে। কলকাতা ও তার উপকণ্ঠে এমন একাধিক সংস্থার খোঁজ পেয়েছে যেগুলি পিকে হালদার বা তার সহযোগীদের হাতেই গড়ে উঠেছে। যদিও সেই আয়ের উৎস পিকে হালদার বা তার সহযোগীরা- কেউই দেখাতে পারিনি।

জুন ০৭,২০২২ at ১৫:২৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভক/জাআ