চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশে কাঁচা রাস্তায় দেড় হাজার মানুষের সীমাহীন দূর্ভোগ

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশে তিনটি কাঁচা রাস্তায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অথচ এ উপজেলার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সদরের কাছেই অবহেলায় পড়ে আছে একাধিককাঁচারাস্তা, ও কালভার্ট।

উপজেলা সদর হতে মাত্র এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে তিনটি কাঁচা রাস্তার অবস্থা এখন মারাত্মক খারাপ। এলাকাবাসির অভিযোগ এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বারবার দাবি করে আসলেও সড়ক গুলোতে তেমন বরাদ্দ হচ্ছে না। তাই এলাকার জনগণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলা সদর হতে মাত্র এক কিলোমিটার দুরে হিজলা ইউনিয়নের কুড়ালতলা গ্রাম। কুড়ালতলা এসডিএফ অফিস থেকে শহীদুল হকের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার, চিতলমারী-শৈলদাহ প্রধান সড়কের বোয়ালিয়া থেকে আল আমীনের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার এবং কুড়ালতলা গাজীপাড়া কমলেশ বিশ্বাসের বাড়ি হতে গণেশ কির্ত্তনীয়ার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচারাস্তা এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।

শিক্ষার্থী, কৃষিজীবি থেকে শুরু করে নানা পেশার বাসিন্দারা বছরের পর বছর এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। চরকুড়ালতলার বাসিন্দা জামাল শেখ, আল আমীন শেখ, সালমা বেগম, আকাশী বেগম, রিয়াজ শেখ, স্বপ্নপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদের, কুড়ালতলা গ্রামের বাসিন্দা ইরাবতী মজুমদার, মো. এমদাদুল ইসলাম, মো. জাবরুন শেখ, মো. সোহাগ শিকদারসহ অনেকে জানান, তাঁদের উৎপাদিত শাক-সব্জি, ঘেরের মাছসহ নানা ফসল নিয়ে এই কাঁচারাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

যাতায়াত করাটা খুবই কষ্টসাধ্য। বছরের পর বছর তাঁদের গ্রামের এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা পড়ে আছে। মেম্বার-চেয়ারম্যানরাভোটের সময় আসলে উন্নয়নের নানা কথা বলেন। কিন্তু তাঁদের রাস্তা, কালভার্ট নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই গ্রামের মো. আব্দুল মজিদের ছেলে নাঈম শেখ শিবপুর সিরাজনগর কওমি মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। নাঈম তার বন্ধু আউয়াল শেখ (৭ম শ্রেণি) ও সামিউল শেখ (৮ম শ্রেণি) কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়ে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসায় যাচ্ছিল।

তাঁরা বলে, ‘যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়-অনেক সময় আছাড়ও খেতে হয়। তবু এই পথে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তাটা পাকা হলে অনেক ভাল হতো।’ এ ব্যাপারে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মেহেদী হাসান সবুজ মুন্সী ওই তিনটি রাস্তার দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘উপজেলা সদর হতে মাত্র এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য তিনটি কাঁচা রাস্তা এলাকায় প্রায় ১ এক হাজার ৫০০ মানুষ বসবাস করেন। উপজেলায় উন্নয়নমূলক কত কাজ হয়। অথচ এই রাস্তা গুলো উন্নয়নের জন্য কোন বরাদ্দ হয় না। এটা খুব দুঃখজনক। রাস্তা গুলো পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীন সাংবাদিকদের জানান, এই ইউনিয়নে যাতায়াতের প্রধান সড়ক (কুড়ালতলা জীবনের দোকান হতে বোয়ালিয়া ফরিদ গাজীর বাড়ি পর্যন্ত) সহ ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের রাস্তা গুলোর অবস্থা মারাত্মক খারাপ। জনগণের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা পাকাকরণ ও সংস্কারের জন্য চিতলমারী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে সম্প্রতি ৩১টি রাস্তার তালিকা দেয়া হয়েছে। রাস্তা গুলোর জন্য বরাদ্দ এবং যথাযথ ভাবে কাজ হলে এই দুর্ভোগ কেটে যাবে।

মে ২৮,২০২২ at ১২:৫০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএসসা/রারি