কোভিড মাঙ্কিপক্স যুদ্ধের ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব : ডব্লিউএইচও

কোভিড মহামারী, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মাঙ্কিপক্সের বিস্তারের ‘ভয়ঙ্কর’ সব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিশ্ব, যা নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। সম্প্রতি আফ্রিকার বাইরে ১৫টি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জেনেভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞরা। খবর বিডিনিউজের।

সেখানেই রোববার বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের প্রথম দিনে সংস্থাটির প্রধান গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে আমাদের রোগ, খরা, দুর্ভিক্ষ এবং যুদ্ধের এক ভয়ানক অভিসরণের মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে সচরাচর মাঙ্কিপঙ দেখা যায়। যদিও এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সহজে ছড়ায় না এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে রোগের উপসর্গও অতটা মারাত্মক হয় না। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাই বিজ্ঞানীদের কাছে ভাইরাস নয় বরং বিষ্ময়কর হচ্ছে ভাইরাসটি যেভাবে ইউরোপ, আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় ছড়াচ্ছে সেটা।

মাঙ্কিপঙ নিয়ে ডব্লিউএইচও প্রধান গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, অবশ্যই কোভিড মহামারী আমাদের বিশ্বে একমাত্র সংকট নয়। বরং বিশ্বজুড়ে আমাদের সহকর্মীরা কঙ্গোতে ইবোলার প্রাদুর্ভাব, মাঙ্কিপঙ এবং অজানা কারণে হেপাটাইটিস ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইউক্রেন এবং ইয়েমেনে যুদ্ধের কারণে সৃষ্টি হওয়া জটিল মানবিক সংকট মোকাবেলায়ও তাদেরকে কাজ করে যেতে হচ্ছে।

আরো পড়ুন :
বড় সংগ্রহের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে লিটন-মুশফিক জুটি
টঙ্গী আরবান প্রোগ্রাম এর উদ্যোগে শিশুশ্রম বন্ধ বিষয়ক গণসচেতনতামূলক সভা

আক্রান্ত বাড়লেও মাঙ্কিপঙ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব : বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপঙে আরও মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও রোগটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যদিও রোগের এবারের প্রাদুর্ভাব খানিকটা অস্বাভাবিক। তারপরও বলা যায়, অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ যেমন কোভিডের মতো এটি সহজে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। আমরা জানি এজন্য খুবই ঘনিষ্ঠ শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন হয়। সাধারণত আক্রান্ত একজনের চামড়ার সঙ্গে অন্যজনের চামড়ার সংস্পর্শ থেকে এ রোগ ছড়ায়।

এছাড়া, এটা কোভিডের মত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃদু বা উপসর্গহীন নয়। বরং মাঙ্কিপঙে আক্রান্ত হলে শরীর খারাপ করবে এবং শরীরে ফোস্কার মত গোটা দেখা দেবে। তাই কেউ এ রোগে আক্রান্ত কিনা সেটা জানতে পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সরাসরি এই রোগের টিকা এখনো সহজলভ্য না হলেও গুটিবসন্তের টিকা দিয়ে এ ভাইরাস প্রায় ৮৫ শতাংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ, দুই ভাইরাসের মধ্যে মিল রয়েছে। এমনকী মাঙ্কিপঙ প্রতিরোধের জন্য সবার টিকা নেওয়াও প্রয়োজন নেই বলেও মত ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞদের। মাঙ্কিপঙের টিকাও আছে। কিন্তু সেটা তুলনামূলক নতুন এবং সব জায়গায় পাওয়া যায় না। যদিও ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা টিকা আরও সহজলভ্য করতে কাজ করছেন।

মে ২৩,২০২২ at ১৭:২৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দআ/রারি