রাবি শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৯মে) বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর লিখিত এ অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী মো. নূর আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি মতিহার হলের ২৫৪ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্ৰামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বদেশ, তানভীর, শাহীন, জুবায়ের, জারিদ ও অনাবিল। এরা সকলেই একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১টায় শাহীন ও তানভীর নামে তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের দু’জন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী নুর আলমের রুম এসে ঘুম থেকে জাগিয়ে ব্লকের ১৩৬ নম্বর রুমে স্বদেশের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে স্বদেশ ছাড়া আর‌ও পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন জুবাইয়ের, জারিদ অনাবিল এবং অজ্ঞাত। সবাই মিলে তাকে মানসিকভাবে অনেক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে রানভীর ও জুবাইয়ের তার মাথার পেছনে অনেক জোরে জোড়ে আঘাত করতে থাকে। তখন থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে লিখিত অভিযোগে প্রক্টরকে জানান।

ভুক্তভোগী নূর আলম বলেন, ‘গত রাত (১৯মে) ১টার দিকে তানভীর ভাই ও শাহীন ভাই আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ১৩৬ নম্বর রুমে স্বদেশ ভাইয়ের রুমে নিয়ে যান এবং শুরু হয় এক্সট্রিম পর্যায়ের র্যাগ। এক পর্যায়ে তানভীর ভাই বলেন, তুই আমাকে চিনিস? আমার বাড়ি এখানে। এত সাহস বেড়ে গেছে তোর! তোর বাড়ি কোথায় রে? তোরা কয় ভাই-বোন? তোর বাবা-মা কী করে? তুই আমাকে হেডাম দেখাস!’

আরো পড়ুন :
গোপালগঞ্জের অন্ধ প্রতিবন্ধী ইবাদ আলীর কষ্টের পথে গানের জীবন!
শিবগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন

অভিযোগের বিষয়ে স্বদেশ বলেন, ‘নূর আলম আমার বিভাগের ছোটভাই। সে এক বড় ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করায় বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আমার রুমে ডেকেছিলাম। এসময় আমার সাথে তার বিভাগের চার-পাঁচজন বড়ভাই ছিলো। সেখানে তাকে কোনো মানসিক অত্যাচার করা হয় নি।’

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি জেনেছি। আমি হল কর্তৃপক্ষকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে একটা রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মুসতাক আহমেদ বলেন, ‘বাংলা বিভাগের একজন জুনিয়র ও দু’জন সিনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিট নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। আমি ডেকে এর সুরাহা করে দিয়েছি। ওই শিক্ষার্থী ওর সিটেই থাকবে।’

বাংলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সরকার সুজিত কুমার জানান, তিনি ছুটিতে আছেন, তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানভীরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

মে ১৯,২০২২ at ১৯:৩৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আআ/রারি