গোপনে নিয়োগ বানিজ্য, এক পদে ১৫ লাখ টাকা দাবি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চাটশাল দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। রাতের আধারে নিজেদের পছন্দের লোককে নিয়োগের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

নিয়োগ বানিজ্য ও অথর্ লেনদেনের অভিযোগ এনে ১২ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে চাটশাল ৩ মাথা মোড়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্য রফিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান ও ওবাইদুল হক পুতুলসহ কমিটির সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান ও তানভীর ইসলাম সুহিন। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলন থেকে তদন্তের মাধ্যমে এই গোপন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত এবং নতুন করে প্রকাশ্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও সহসভাপতির শাস্থির দাবি করা হয়।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, শূন্যপদে আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী, অফিস সহকারী এবং অফিস সহায়ক এই চারটি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলী। তবে কত তারিখে কিংবা কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, তা জানতে চাইলে এটি প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

নিয়োগের বিষয়ে লোক মুখে শোনার পর অফিস সহকারী পদে নিজের ভাতিজার জন্য যোগাযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম। পরে গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলীর বাড়িতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে যায় সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম বাবু। আলোচনার এক পর্যায়ে ওই একটি পদের জন্য তার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক ও সহসভাপতি।

আরো পড়ুন :
চৌগাছা বাজারে দোকানের সাটার কেটে দুঃসাহসিক চুরি, ক্ষুব্ধ সাধারন ব্যবসায়ীরা
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত ১৬ ডিআইজির শ্রদ্ধা

অভিযোগ রয়েছে, আগ্রহী অনেক প্রার্থী প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে ব্যর্থ তারা। তবে বিধিমালার দোহাই দিয়ে পত্রিকার নাম ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলী। নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলেই তিনি নাকি বলেন, আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। এখন পত্রিকার নাম শুনে কি হবে!

মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলীর সাথে। নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়টি জানতে চাওয়ার সাথে সাথেই তিনি ফোনটি কেটে দেন। পরে তাকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি সাজিয়া ফেরদৌসি সম্পার মাস্টার্স পরিক্ষা চলছে দিনাজপুর সরকারী কলেজে। কথা হয় তার স্বামী এবং প্রতিষ্ঠানের সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম বাবুর সাথে। তিনি এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পৃথক চারটি পদে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হবে। আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। বিধি মেনেই আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছি।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, কোন পত্রিকায় কিংবা কত তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে তা আমার মনে নেই। স্কুলের কাগজপত্র দেখতে হবে।

এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার সরকার বলেন, আমার দপ্তরে এখন কোন অভিযোগ আসেনি। তবে শুনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। তবে সেটির সর্ব শেষ অবস্থা এখনও জানি না। আমার কাছে অভিযোগ আসলে তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মে ১৩,২০২২ at ২০:২৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাউআমা/রারি