ক্ষেতলালে স্মার্ট কার্ড বিতরণে অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছেনা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন অফিসের নিয়োগকৃত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ১৪ ফেব্রুয়ারী হতে বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করা হয়। পর্যায়ক্রমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ভোটারদের মাঝে নিয়ম মেনে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন।

এরপর শুরু হয় নানা অনিয়ম, প্রথমে ওই সব স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতরণের কথা থাকলেও ইন্টারনেট জটিলতাকে ইস্যু করে বড়াইল ইউনিয়নের র্স্মাট এনআইডি কার্ড উপজেলা হলরুমে এনে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। ওই ইউনিয়ের ৮-১০ কিলোমিটার দূর থেকে কার্ড সংগ্রহ করতে এসে আর্থিক ব্যায় ও নানা ভোগান্তির শিকার হয় বৃদ্ধ, নারী ও পুরুষসহ কয়েক হাজার সাধারণ নাগরিক।

পরে সাধারণ জনগণের দাবীতে স্ব স্ব ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কেন্দ্র করা হয়। নিয়ম ছিল- কোন ভোটারের পুরাতন এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেলে তারা ৩৫০ টাকার ব্যাংক ড্রাফ নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবে।

ক্ষেতলাল নির্বাচন অফিসের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক কর্মচারির তথ্য মতে, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের নির্ধারিত দালালদের মাধ্যমে ওই সমস্ত পুরাতন আইডি হারানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের নিকট থেকে জনপ্রতি ৫শ থেকে ৭শ টাকা হারে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে নামমাত্র কয়েক জনের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে বাঁকী টাকা সকলের মধ্যে ভাগাভাগি হয় ।

লাইনে না দাড়িঁয়ে আগে প্রাপ্তির ভিত্তিতে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিতরণ কেন্দ্রগুলোর বাহিরে এনআইডি কার্ডের ডুব্লিকেট কপি তৈরির পশরা নিয়ে বসেছিল কম্পিউটার দোকানীরা, সেখানেও প্রতি কার্ডের বিনিময়ে ভোটারদের গুনতে হয়েছে ৩০-৪০ টাকা। ওইসব দোকানদারদেরও কমিশন দিতে হয়েছে দালালদের।

আরো পড়ুন :
ডিওডোরেন্টের বিস্ময়কর ব্যবহার জেনেনিন
ভূমিহীন নন, তবুও পেলেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর

উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে সময় নির্বাচন অফিসের নিয়োগকৃত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে টিম লিডার রাকিব হোসেনকে স্থায়ী ভাবে অব্যহতি এবং বাঁকীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত রাকিব বলেন, স্মার্ট জাতীয় এনআইডি কার্ড বিতরণে আমি টিম লিডার ছিলাম ম্যানেজমেন্টের সমস্যার কারনে আমাকে শোকজ করা হয়েছিল।

রবিবার (৮ মার্চ) উপজেলার বাদ পড়া ভোটাররা নির্বাচন অফিসে তাদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করতে আসলে আবারও অর্থলেনদেনের অভিযোগ উঠে ওই অফিসের অফিস সহায়ক মামুনুর রশিদ সাজুর বিরুদ্ধে। সে উপজেলার শালুকডুবি গ্রামের জুয়েল হোসেন ও তার সঙ্গীয় একজনের পুরাতন কার্ড হারিয়ে যাওয়ার পরও ব্যাংক ড্রাফের চালান কপি ছাড়াই ৮শত টাকার নিয়ে ২টি র্স্মাট এনআইডি কার্ড দিয়ে দেয়।

অপরদিকে দাশড়া খাঁপাড়া গ্রামের বাবলু হোসেনের স্ত্রী চট্টগ্রামে অবস্থান করলেও স্মার্ট কার্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুরাতন আইডি জমা নিয়ে অর্থের দাবী করে। এমন অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রমাণসহ ওই অফিস সহায়কের বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনিছার রহমানকে জানালে তিনি ওই অফিস সহায়কের অভিযোগের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ইফতে খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেখতে চেয়ে উদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনিছার রহমান বলেন, জেলা নির্বাচন অফিসারের নির্দেশে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় টিম লিডার রাকিবকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

মে ১০,২০২২ at ১৮:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শাইশা/রারি