মৃত্যু: হাত-পা বেঁধে কাতুকুতুর রক্তপাতহীন অত্যাচার!

হাসি না পেলেও হাসতে হবে! স্বরচিত গল্প শোনানোর জন্য এমন জোরজুলুম ছিল কাতুকুতু বুড়োর। জোর করে হাসাতে লম্বা পালক দিয়ে গায়ে সুড়সু়ড়িও দিতেন সেই সর্বনেশে বুড়ো। তবে সে তো সুকুমার রায়ের মুলুকে। বাস্তবেও এমন অত্যাচার হয় নাকি? অলঙ্করণ: সুকুমার রায়।


এ অত্যাচার রক্তপাতহীন। এমনকি, অত্যাচারের চিহ্ন পর্যন্ত থাকে না দেহে। সুকুমার রায়ের দুনিয়ার বাইরেও নানা দেশেই যুগ যুগ ধরে বন্দিদের উপর অত্যাচারে নির্বিচারে ব্যবহার করা হয়েছে এই চিনে দাওয়াই। জেরার সময় বন্দিদের হাত-পা বেঁধে তাঁদের উপর কাতুকাতুর অত্যাচার চালানো হত। তার জেরে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে বন্দিদের। ছবি: সংগৃহীত।

 

 

 

 

 

২০৬ খ্রিস্টপূর্বে চিনের হান সাম্রাজ্যে কাতুকুতুকে হাতিয়ার করেই প্রজাদের উপর অত্যাচার করতেন অভিজাতরা। কারণ, এ অত্যাচারের চিহ্ন ধরা পড়ে না প্রজাদের দেহে। অন্য দিকে, অত্যাচারের পর সহজেই তার প্রভাবমুক্ত হতে পারতেন বন্দিরা। ছবি: সংগৃহীত।


চিনের গণ্ডি পেরিয়ে এই দাওয়াই কী ভাবে অন্য দেশে পৌঁছল, তা স্পষ্ট জানা যায় না। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার ফায়দা তুলেছিলেন নাৎসিরা। সমকামী হওয়ার ‘অপরাধে’ জোসেফ কহোয়াট নামে এক অস্ট্রিয়ানকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দি করেছিলেন তাঁরা। ছবি: সংগৃহীত।

জোসেফের দাবি, ফ্লোসেনবার্গের শিবিরে থাকাকালীন তিনি দেখেছিলেন কী ভাবে বন্দিদের উপর কাতুকুতুর অত্যাচার চালাতেন রক্ষীরা। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত বই ‘দ্য মেন উইথ দ্য পিঙ্ক ট্রায়াঙ্গল’-এ জোসেফের কাহিনি তুলে ধরেছিলেন হান্স নিউম্যান। হাইঞ্জ হেগার নামে ছদ্মনামে লেখা ওই বইয়েও জোসেফের উপর অত্যাচারের বর্ণনাও ধরা পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

ইউরোপের অন্য দেশেও এই চিনে দাওয়াই ব্যবহার হয়েছে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল-এ তার খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যায়। ইটালিতে জেলবন্দিদের হাত-পা বেঁধে তাঁদের পায়ে নুন-জল মাখিয়ে দিতেন আধিকারিকেরা। তার পর বন্দিদের উল্টো করে শুইয়ে তাঁদের সামনে ছেড়ে দেওয়া হত একটি ছাগলকে। ছবি: সংগৃহীত।