এখানে পরিবারে কেউ মারা গেলে কেটে ফেলা হয় মহিলাদের আঙ্গুল

আজও ঝাঁ-ঝাঁ চকচকে পৃথিবীর বদলে চোখে পড়ে অন্ধকার গুহা-মানবের ন্যয় জীবনযাত্রা। আর এই দৃশ্য চোখে পড়বে যখন আপনি পৌঁছে যাবেন ইন্দোনেশিয়ার দানি উপজাতিরদের এলাকায়।

উন্নতমানের প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মানব জীবনে যতই উন্নতি ঘটুক না কেন আজও কোথাও যেন প্রাচীন মানব সভ্যতার যুগেই থমকে রয়েছে সময়। এইখানের পৃথিবী বর্তমান পৃথিবীর চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে আজও ঝাঁ-ঝাঁ চকচকে পৃথিবীর বদলে চোখে পড়ে অন্ধকার গুহা-মানবের ন্যয় জীবনযাত্রা। আর এই দৃশ্য চোখে পড়বে যখন আপনি পৌঁছে যাবেন ইন্দোনেশিয়ার দানি উপজাতিরদের এলাকায়।

এখানে বিশ্বের অনন্য ঐতিহ্য ও তার অদ্ভুত আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়। ইন্দোনেশিয়ার একটি উপজাতি যা দানি উপজাতি নামে পরিচিত। এদের কিছু অদ্ভুত ঐতিহ্য যার সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। যদিও এদের এই ঐতিহ্যগুলি বর্তমান কালের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। সেই কারণে পছন্দ নাও হতে পারে, তবে সেখানে এটি সঠিক বলে মনে করা হয়।

আসলে এই দানি আদিবাসী গোত্রে পরিবারের কেউ মারা গেলে পরিবারের মহিলাদের হাতের আঙুলের উপরের অংশ কেটে ফেলা হয়। আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এটি কীভাবে সম্ভব! সভ্য সমাজে এটা কোনও নিয়ম হতে পারে না। কিন্তু এখানের লোকেদের এই নিয়মটি সঠিক বলে মনে করা হয়। এই নিয়মটি মেয়েরাও সঠিক বলেই মনে করেন।

একই সঙ্গে এই প্রথায় কেন শুধু নারীদেরই এই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেওয়া হয় এবং পুরুষদের কেন এর মুখোমুখি হতে হয় না তা নিয়েও প্রচুর মন্তব্য রয়েছে। তাই আজ আমরা এই ঐতিহ্য সম্পর্কে এই অদ্ভুত ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাচ্ছি। জেনে নিন এই ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিশেষ কিছু তথ্য, যা সত্যিই অবাক করার মতো।

এই প্রথাটি ইন্দোনেশিয়ার একটি উপজাতিতে, যার নাম দানি উপজাতি। এই ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে বাস করছে এবং এই লোকেরা তাদের অনন্য সংস্কৃতি অনুসারে জীবনযাপনের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত। তারা তাদের পোশাকের কারণেই শিরোনামে এসেছে।

আরো পড়ুন :
অবৈধ আহবায়ক কমিটির বিষয়ে কাহালু প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের বিবৃতি
শিবগঞ্জে স্বাস্থ্য বিধি না মানায় ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা

এই গোষ্ঠীর বিষয়ে শিরোনামে আসা সংবাদের একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল, এখানে নারী-পুরুষের পোশাক বেশ অনন্য। একবার জাতিসংঘে, পাপুয়া নিউ গিনির একজন প্রতিনিধি এদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রাষ্ট্রপুঞ্জের এক সামেটে এসেছিলেন। সেই সময় এটি নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছিল। কী ছিল সেই পোশাক!

এই উপজাতির পোশাক আলোচনায় থাকে কারণ এখানে নারী ও পুরুষ উভয়েই কোমরের উপরে কিছু পরে না। অর্থাৎ নারীরাও ঘুরে বেড়ায় এবং অর্ধ-উলঙ্গ অবস্থায় বসবাস করে। এখানে মহিলাদের পোশাক না পরা সাধারণ ব্যাপার। একই সময়ে, পুরুষরা কোমরের নীচে ‘কোটেকা’ নামক একটি পোশাক পরেন, যা শুধুমাত্র লিঙ্গকে ঢেকে রাখে এবং এটি একটি পাইপের মতো। এ ছাড়া পুরুষেরা শরীরে আর কিছু পরে না। এছাড়াও মহিলারা কোমরের নীচে হাতে তৈরি স্কার্ট পরেন।

এদের পোশার ছাড়াও অন্যতম রীতিটি হল এখানে পরিবাকোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর এ পরিবারের নারীদের একটি আঙুল কেটে ফেলা হয়। হ্যাঁ, ব্যক্তির মৃত্যুর পর মহিলাদের আঙুলের উপরের অংশ কেটে ফেলা হয়। এই কারণে অনেক নারীর আঙুল কেটে গেছে। এটা বেশ বেদনাদায়ক।

এই অনুষ্ঠান করার আগে মহিলাদের আঙুল দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয় যাতে এতে রক্ত ​​চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর কুড়াল দিয়ে কেটে আলাদা করা হয়। বলা হয় আঙুলটি হয় পুড়ে গেছে নয়তো কোথাও রাখা হয়েছে। কুড়াল দিয়ে আঙুল কাটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। কথিত আছে যে এই প্রথাটি একজনের পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি দিতে সঞ্চালিত হয়। তবে এখন এই প্রথা কমে এসেছে এবং সরকারও এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এই প্রথাটি বেশ অদ্ভুত, কারণ এই প্রথায় মহিলাদের একটি যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ডেইলিমেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , এই উপজাতিতে যখন কোনও পরিবারের কোনও সদস্য মারা যায়, তখন এই পরিবারের মহিলাদের এই ঐতিহ্যের মুখোমুখি হতে হয়, যা বেশ বেদনাদায়ক।

জানুয়ারি ২২.২০২১ at ২২:৫০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রানি/রারি