জনাকীর্ণ কারাগার, সর্বোচ্চ নম্বর, পেলেন স্কলারশিপও

হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হওয়া ওই ব্যক্তির নাম সাইয়েদ নাঈম শাহ। হাইস্কুল পরীক্ষায় যেসব অনিয়মিত শিক্ষার্থী প্রাইভেটভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী এই যুবক।

বলছি, পাকিস্তানের করাচির জনাকীর্ণ একটি কারাগারে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করা এক আসামি কথা। গত বছরে শহরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়াদের অন্যতম হয়েছেন। এ বিরল সফলতার কারণে কারাগারের দুর্বিষহ জীবনে তার লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে সহায়তা করতে তাকে স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে।

এতে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব পাকিস্তান (আইসিএপি) তাকে স্কলারশিপ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সবচেয়ে বড় শহর করাচির কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সাইয়েদ নাঈম শাহ বলেন, খুব আত্মপ্রত্যয়ী না হলে কারাগারে পচে মরা কেউ এমন সফলতা অর্জন করতে পারবেন না।

পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর শহরে ১৮৯৯ সালে ব্রিটিশরা এই কারাগার নির্মাণ করেছিল। দেশের অন্যান্য কারাগারের মতো ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি থাকার কুখ্যাতি রয়েছে এটির। দুই হাজার ৪০০ বন্দি রাখার জায়গা থাকলেও সেখানে রয়েছেন প্রায় ছয় হাজার। পাকিস্তানের কারাগারে সার্বিকভাবে ১৩০ শতাংশ সক্ষমতা রয়েছে। এসব বন্দিশালার বায়ু চলাচল ব্যবস্থা খুব নাজুক। অপর্যাপ্ত শয্যার পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসা সংকট। এছাড়া নিরাপদ পানি ও গোসলখানারও অভাব রয়েছে।

আরো পড়ুন:
ইসি নিয়োগের বিল সংসদে উত্থাপন করা হবে রবিবার
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন

কারাগারের শ্রেণিকক্ষের ভেতর থেকে এই যুবক বলেন, শৈশবে বিদ্যালয়কে খুব উপভোগ করতাম। কিন্তু পরিবারে অভাব থাকায় লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কারাগারের জ্যেষ্ঠ বন্দিরা আমাকে লেখাপড়ায় উৎসাহিত ও সহায়তা করেন।

উপকারা সুপার সাঈম সুমরো বলেন, করাচি কারাগারে এক হাজার ২০০ বন্দি লেখাপড়া করছেন। কিন্তু তার সফলতা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্কলারশিপ পেতে তাকে আরেকটি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া চারজনকে প্রতি বছর পাঁচ হাজার ৭০০ ডলারের স্কলারশিপ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ব্যক্তিগত রেষারেষিদের জেরে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার দায়ে ২০১৮ সালে তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। বিচারের সময়ে বন্দি থাকা, লেখাপড়া, ভালো ব্যবহার ও রক্তদানের কারণে তাকে ছয় বছরের মতো কারাগারে থাকতে হবে।

জানুয়ারি ২২.২০২২ at ১৭:০৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ