দিনের বেলা স্কুল, সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি

শীত বাড়ার সাথে সাথে বগুড়া কাহালুর বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে পিঠা বিক্রি। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বিক্রেতারা ভাপা, চিতই, কুশলী, খুদের বড়াসহ বিভিন্ন রকমের তেলে ভাজা পিঠার পরসা সাজিয়ে বসে।

বিভিন্ন বাজারের অলিতে, গলিতে রাস্তার মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় বসে ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান। এসব পিঠার দোকানে সন্ধ্যার পর ভিড় জমে সকল শ্রেণির মানুষের। সরজমিনে দেখা যায়।

শহরের বটতলা, চারমাথা রেল গেট, সিএনজি ষ্ট্যান্ড, সদর ইউপি মোড়,খাদ্য গুদাম মোড়, সারাই বাজারসহ, উপজেলা র বিভিন্ন বাজার মালঞ্চা, দূর্গাপুর, দেওগ্রাম, এরইল, মুরইল, দরগাহাট, বিবিরপুকুর, শেখাহার, বারমাইল, তিনদীঘিহাট, পাকড়, আড়োলা সহবিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান।

এদের মধ্যে বেশির ভাগই শীত আসলেই পিঠার দোকান নিয়ে রাস্তার পাশে বসে পড়ে।পুরো শীত পযর্ন্ত চলে এ ব্যবসা। পিঠা বিক্রিতার অধিকাংশ হত দরিদ্র পরিবারের নারী। সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে বাড়তি আয়ের আশায় ফুটপাতে পিঠা তৈরী করছে তারা।

আবার সংসারে উর্পাজনক্ষম কেউ না থাকায় পিঠা তৈরী করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকই। কাহালু রেলগেট চারমাথা মোড়ে পিঠা বিক্রেতা আনিকা আক্তার মনি (১৫), পিতা মহরম হোসেন। কাহলু তাইরুনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। দিনের বেলায় স্কুলে পড়াশোনা করেন,এবং সন্ধ্যায় বাবার সাথে পিঠা বিক্রিয় করেন।

তিনি জানান আমরা ৩ ভাই বোন আমি বড়, আর দুজন ছোট। আমাদের কোন জমা- জমি নাই, সংসারে আয় রোজগার কম। বাবা ও মাকে সাহায্য করার জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যায় পিঠার দোকানে বসে পিঠা তৈরী করে দেয়।

দোকান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে আমাদের ঘর- ভাড়া, সংসার খরচ, মার প্রতিদিনে ওষুধ খরচ, আমার পড়াশোনার খরচ চলে কোন রকম ভাবে। দিনের বেলায় স্কুলে বাসায় পড়াশোনা করি।

তিনি আরও বলেন আমি গরিব বলে বলছি না, কোন কাজ ছোট না। শীত শুরু থেকে পিঠা বিক্রি ভালো হয় ও দোকানে ভীর জমে। অনেক সময় ক্রেতার চাহিদা মিটানো যায় না।

আরো পড়ুন :
যশোরে এক কেঁজি চারশ’গ্রাম গাঁজা ও ২৫পিস ইয়াবা উদ্ধার, গ্রেফতার- ৫
কুড়িগ্রামে আলুচাষে কৃষকের সাফল্যের হাসি

চিতই পিঠা ১০ টাকা, ভাপা পিঠা ১০ টাকা, ডিমঃ মুরগী ১০ টাকা, হাঁস ১৫ টাকা, ভাপা পিঠা মুখরোচক তৈরি করতে ঝুরঝুরে গুড়, নারিকেল দিয়ে বানানো হয়, চিতই পিঠার স্বাদ বাড়ানোর জন্য সরিষা বাটা,ধনেপাতা,মরিচ বাটা,শুটকি ভর্তা, দোকানে রাখা হয়। আনিকার বিষয়ে কাহালু তাইরুনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন বলেন আনিকা দশম শ্রেণির ছাত্রী সে খেলা ধুলায় ও ভালো। তার উপবৃত্তি হয় নাই কোন কারণ হয়তো আছে, তবে আগামীতে তার সকল ফি মওকুফ করার চেষ্টা করবো।

ক্রেতা ডা. শিহাব বলেন প্রায় প্রায় এখানে এসে ভাপা ও চিতই পিঠা মুখরোচক খাবার গরম গরম তৈরী করে দেয় খেতে ভালো লাগে এছাড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ভালো।

ক্রেতা পুলিশ আ. আলিম বলেন চাকরি সুবাদে বাড়িতে সময় মত যেতে পারি না পিঠা খাওয়া যায় না, তাই এখানে গরম গরম ভেজে দেয় খেতে ভালোই লাগে।

ক্রেতা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সৌগির আহমেদ বলেন আমি মাঝেমধ্যে পিঠা খাই, আজও খেতে এলাম ভালই লাগে। ক্রেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাগর চৌধুরী বলেন আমি কখনও এখানে খাই নি তবে আজকে খেয়ে দেখলাম ভালোই লাগে।

জানুয়ারি ১৪.২০২১ at ১২:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শা/রারি