ভোট চোরদের জনগণ রেহাই দেয় না: প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি।

ভোট চোরদের জনগণ রেহাই দেয় না বলেই ভোট চুরির অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ক্ষমতায় বসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট থেকে তৈরি হওয়া দল বিএনপি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? ৭৫ এর পর সংবিধান ভঙ্গ করে ক্ষমতা দখল করা হয়েছিল। সেনাবাহিনীতে একবার না ১৯-২০ বার কু হয়েছে। আর তার ফলাফল কি, মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে, সেনাবাহিনীকে হত্যা করা হয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে। তখন ক্ষমতায় বসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করা। সেই দলেরই নাম বিএনপি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কেমন নির্বাচন করেছিল, কত শতাংশ ভোট পড়েছিল। সব জায়গায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে দিয়ে, ভোটের বাক্স সিল দিয়ে খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত। খালেদা জিয়া জনগণের ভোট চুরি করেছিল বলে গণঅভ্যূথান হয়েছিল, সংগ্রাম, আন্দোলন হয়েছিল। সেই সংগ্রামের মধ্যে নাকে খর দিয়ে ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। রাষ্ট্রপতি ভবনে পদত্যাগ করতে যাওয়ার সময় জনগণের অনুমতি নিয়ে তাকে যেতে হয়েছিল। ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয়না।

আরো পড়ুন:
জুম বাংলাদেশ যশোর শাখার আয়োজনে শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ
কুড়িগ্রামে রাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আগমন

স্বাধীনতাবিরোধী কিছু প্রেতাত্মা এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলে পেছনে লেগে থাকা এটা এক শ্রেণীর মানুষের অভ্যাস। যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা খুনিদের নিয়ে, যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্রপরিচালনা করে বাংলাদেশের উন্নয়নকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনো সমাজে আছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে এবং তারাই এগুলো করে বেড়াচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যেন ঘুরে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করে হয়। পরাধীন বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ থেকে মুক্ত করার কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে সেই ছাত্র জীবন থেকে সংগ্রাম করেছেন। এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভূদ্ধ করেছেন। একই সঙ্গে একটি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজটি তিনি করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় অর্জন হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের মিত্র বাহিনী ও শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আটকা পড়ে প্রায় ৯৬ হাজার পাকিস্তানি। যে কারণে, ফাঁসির আদেশ হওয়া সত্বেও পাকিস্তানিদের পরাজয়ের কারণে ইয়াহিয়া খানের পরাজয় ঘটে ভুট্টো ক্ষমতায় আসে। তখন ভুট্টো নিজের চামড়া বাঁচাতে ও এই ৯৬ হাজার পাকিস্থানি ফিরিয়ে নিতে এবং আন্তর্জাতিক চাপে জাতির পিতা শেখ মুজিব-কে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তিনি চেয়েছিলেন এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে। তিনি কাজ শুরু করেছিলেন, মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ হিসেবে স্বল্পোন্নত দেশ গড়ে তুলে তিনি জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন। এদেশের জনগণকে নিয়েই তিনি স্বল্পোন্নত দেশ গড়ে তোলেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যখন বঙ্গবন্ধু একটি ঘুনে ধরা সমাজকে নতুন সমাজ বিনির্মানের পদক্ষেপ নিলেন তখন ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। বাংলাদেশের মাটি তো উর্বর, তাই যেমন ভালো মানুষ ও জন্মে তেমনি পরগাছা ও জন্মে। আর দেশে কিছু পরগাছা ছিল তাদের ইচ্ছা ছিল এ দেশ যেন আর উন্নতি না করতে পারে।

জানুয়ারি ১১.২০২২ at ১৯:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ