কক্সবাজারের পেকুয়ায় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কৃষকলীগ নেতার নেতৃত্বে মাতামুহুরী নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলন করছে। এ নেতার অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের মহোৎসব চললেও নীরব রয়েছে প্রশাসন ।
এক মাস ধরে সদর ইউনিয়নের পুর্ব মেহেরনামা বাঘগুজারা রাবারড্রাম পয়েন্টে মাতামুহুরী নদীতে বিশাল আকারের ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন একটি বালুখেকো সিন্ডিকেট। প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙুলী দেখিয়ে উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক মেহের আলী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নদী থেকে বালি উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছেন।
খাল কিংবা নদী থেকে বালি উত্তোলনের নিয়ম না থাকলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দেদারছে বালি উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কৃষকলীগের এ নেতা। এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউপির পূর্ব মেহেরনামা বাঘগুজারা মাতামুহুরি নদীর রাবারড্রাম পয়েন্টে বিরাট আকারের ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন। স্থানীয়রা জানান প্রায় একমাস ধরে চলছে এই বালি উত্তোলন। যার ফলে নদী ভাঙনের শংঙ্কায় রয়েছে নদীর পাড়ে অবস্থিত শতাধিক পরিবার। নদী থেকে এই অবৈধ বালি উত্তোলন ফলে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষকলীগ নেতা মেহের আলীর নেতৃত্বে চলছে নদী থেকে বালি লুট। হাজার হাজার ঘনফুট বালি স্তুপ করা হয়েছে। এসব বালি গাড়ি যোগে পেকুয়ার বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হবে। এছাড়া মানুষের ভিটেবাড়ি ভরাট কাজেও ব্যবহার হচ্ছে।
প্রায় মাসদেড়েক ধরে নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে চলছে এই বালি উত্তোলন। যার ফলে বর্ষাকালে নদী ভাঙনসহ নদীর পাড়ে বসবাসরত বাসিন্দাদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। কৃষক লীগের ওই নেতা প্রভাবশালী হওয়াতে আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করেই অবৈধ বালি উত্তোলনের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
স্থানীয়রা আরো জানিয়েছেন, কৃষকলীগ নেতা মেহের আলী একজন বালিখেকো। উপকুলের বালিখেকো নামে তিনি বেশ পরিচিত। গত তিন বছর ধরে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে তার নেতৃত্বে চলছে বালি উত্তোলন। দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে বালি উত্তোলন করে পাচার করে আসলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য এলাকাবাসী জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কৃষকলীগ নেতা মেহের আলী’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বালি উত্তোলনের মেশিন বন্ধ করে দিয়েছি। এখন বালি তুলছিনা।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ আল জিনাত জানান, অবৈধভাবে উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে নদী ভাঙন ও নদী সংলগ্ন ব্রীজ হুমকির মুখে রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে খুব শীগ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য কোন সুযোগ কারো দেওয়া হবে না। খুব শীঘ্রই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানুয়ারি ১১.২০২১ at ১৬:৪০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমজু/রারি