শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটলে যা করবেন

শীতে আবহাওয়ার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ময়েশ্চারের অভাবে হাত ও পায়ের ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে ফলে মানুষের মধ্যেই পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শিশু, প্রত্যেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে। একই রকমভাবে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এ সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে শীতকালে গোড়ালি ফাটে বেশি।

গোড়ালি ফাটার সমস্যা মারাত্মকও হতে পারে। তাই পায়ের গোড়ালির বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কারণ পরিচর্যা না করলে কিংবা সঠিক চিকিৎসা না করালে ব্যথা যন্ত্রণাও দেখা দেয়। তাই বাড়িতে সহজ পদ্ধতিতে সারিয়ে ফেলুন গোড়ালি ফাটার সমস্যা। শীতকালে গোড়ালি ফাটার সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও ফাটা অংশে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন নিয়মিত। এতে ত্বকের মৃত এবং ক্ষতিগ্রস্ত অংশ নরম হয়ে উঠে যাবে। যদি পরিস্থিতি জটিল হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

পা ফাটা থেকে মুক্তি পেতে গোসলের সময় বিশেষ যত্ন নিন। গোসল করার সময় ‘ধুন্দল’-এর খোসা ও সাবান দিয়ে ভালো করে পা পরিষ্কার করুন। এ ছাড়া পিউমিস থাকলে তো আরো ভালো। চেষ্টা করবেন পায়ের গোড়ালি নরম করে রাখার, অয়েলি জেল ক্রিম লাগিয়ে রাখুন। শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করতে দারুণ উপকারী নারিকেল তেল। ত্বককে ময়শ্চারাইজ রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত গোড়ালিতে নারিকেল তেল ম্যাসেজ করুন। নারকেল তেল তো থাকেই তা পায়ের পাতা ও গোড়ালি ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। ত্বক নরমের জন্য তিল তেল বা আমন্ড তেল ভালো। সরষের তেলও লাগাতে পারেন।

আরো পড়ুন:
বেড়া উপজেলার ৯ টি ইউপিতে ৩ টিতে আওয়ামীলীগ ও ৫ টিতে স্বতন্ত্রপ্রার্থী জয়ী
ওমিক্রন: টিকা ছাড়া স্কুলে যাওয়া যাবে না

হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে প্রথমে পা মিনিট ২০ ধরে ভিজিয়ে রাখুন। এবার ত্বক পরিষ্কারের ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে মৃত ত্বকের অংশ তুলে ফেলুন। এবার পা ভালো করে মুছে গোড়ালিতে ময়শ্চারাইজার কিংবা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। শুধু গোসলের সময় নয়, বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালো করে পা পরিষ্কার করে নিন। এরপর শুকনো তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে চেপে পানি মুছুন। এবার ময়েশ্চারাইজার বা ফুট ক্রিম লাগিয়ে নিন। এর পাশাপাশি ফুট স্ক্র্যাবার ও ফুটমাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। বাড়িতে বসে হাতের কাছের কিছু জরুরি জিনিস যে হলুদ, দই, দুধের সর, বেসন দিয়েও গোড়ালির যত্ন নিতে পারেন। ফুট স্ক্র্যাবিংয়ের মাধ্যমে শুরু করুন পায়ের যত্ন।

ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সারিয়ে তুলতে দারুণ উপকারী মধু। অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। শীতকালে নিয়মিত গোড়ালিতে যদি মধু ব্যবহার করেন তাহলে গোড়ালি ফাটার সমস্যা প্রতিরোধ করা যাবে। শীতে ত্বক নরম রাখতে প্রয়োজন ময়েশ্চার। পা ফাটা কমার সঙ্গে সঙ্গে পায়ের ত্বক নরম ও মসৃণ করতে হবে। সুন্দর নরম গোড়ালির জন্য বাড়িতে বেসনের সঙ্গে দুধের স্বর, মধু, হলুদ বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে পারেন। গোড়ালিতে এই পেস্ট লাগিয়ে ভেজা হাত দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। এর পাশাপাশি, পাকা কলা ভালো করে চটকে নিয়ে এতে সামান্য নারিকেল তেল ও দুধের স্বর মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে গোড়ালিতে লাগান। ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া গোলাপজল আর, গ্লিসারিন মিশিয়েও লাগাতে পারেন।

ফুট বাথ নেওয়ার পর অ্যালোভেরা জেল আর অলিভ অয়েলের একটা মিশ্রণ তৈরি করে পুরো পায়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন। কয়েকটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ছিদ্র করে তেলটা বের করে নিন। তার পর পেট্রোলিয়াম জেলির সঙ্গে ভিটামিন ই মিশিয়ে সেটা পায়ে মেখে ফেলুন। রাতের দিকে এই প্রলেপ লাগিয়ে মোজা পায়ে দিয়ে ঘুমালে দারুণ নরম থাকবে পা। তবে পা গরম হয়ে উঠলে অবশ্যই মোজা খুলে ফেলুন।

জানুয়ারি ০৬.২০২২ at ১৭:৩৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ