ফুলবাড়িতে হারিয়ে যেতে বসেছে কামারশিল্প

সারা দেশের মত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কামারশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। যারা দীর্ঘদিন থেকে কামার শিল্পে কাজ করেছেন তারাই চল্লিশ পঞ্চাশ বছর যাবৎ ধরে রেখেছেন এই শিল্প। কোরবানী ঈদে তাদের দাপট বাড়লেও সারা বছর থাকেন অনেকটা অবহেলিত।

আগুন লোহা আর হাতুড়ির পিটুনিতে তৈরী দা, খুরপি, বটি, কুড়াল, হাতুড়ি, নিড়ানী, কাস্তে, ছুরি, খন্তা সারা বছর এখনো বানান তারা। কারখানার তৈরি এসব পণ্য সরবরাহ থাকায় তারা আগের চেয়ে অনেক কম বানাতে পারেন। আগুন লোহা আর হাতুড়ির পিটুনির টুকটাক শব্দের মত ঝুঁকে ঝুঁকে চলে তাদেরও সংসারের চাকা।

উপজেলার বালারহাট বাজারের কামার সোলায়মান (৭০) জানান,তার শরীর আগের মত চলে না। শরীর না চললেও পেশাও পাল্টাতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে কাজ করছেন তিনি। লোহার দাম বাড়ায় পণ্যেরও দাম বেড়েছে। ইদানিং কারখানায় দা, খুরপি, বটি, কুড়াল, হাতুড়ি, নিড়ানী, কাস্তে, ছুরি, খন্তা তৈরি হওয়ায় দামও কম। কম দামে লোকে ওসব পণ্য কেনেন।

আরো পড়ুন :
আইফোন অর্ডার করে পেলেন চকলেট
নওগাঁয় ১৪৪ ধারা সফল করতে তৎপর পুলিশ

তিনি জানান, ছেলে বকুলকে (২৭) নিয়ে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। বকুল জানান, যখন কাজ আর থাকে না তখন ঢাকা যান কাজের সন্ধানে।

উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ের পশ্চিম ধনিরামের বাঘখাওয়ার চর গ্রামের মৃত আমজাদ মুনসীর ছেলে কাসেম আলী ৪০ বছর ধরে কামারশিল্পে কাজ করছেন। হাতুড়ি পিটিয়ে জীবন চলে তার। সারাদিন হাতুড়ি পিটিয়ে আয় হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।

কাসেম আলী জানান, মানভেদে নতুন দা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, ছুরি ১২০ থেকে ২০০ টাকায় এবং বটি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। কামারদের হাতে তৈরি পণ্য মজবুত ও টেকসই হয়। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় বাজারে চাহিদা অনেক কম। কারখানার তৈরি পণ্য বেশি মজবুত না হলেও দেখতে সুন্দর হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা বেশি। তিনি হতাশাচিত্তে জানান, এই খানেই হেরে যাচ্ছেন তারা।

ডিসেম্বর ২৮.২০২১ at ১৭:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রপ/মক/রারি