দৌলতপুরে বেড়েছে তুলার চাষ, ন্যায্যদামে চাষিদের মুখে হাসি

 কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একটি তুলা ক্ষেত পরিচর্যা করছেন এক কৃষক। ছবি : দেশ দর্পণ।

সাম্প্রতিককালে হাইব্রিড ও উচ্চফলনশীল জাতের তুলা চাষ প্রবর্তনের ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় তুলার ফলন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে তুলার বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। এ উপজেলায় তুলা এখন একটি লাভজনক ফসল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে এক সময় ব্যাপকভাবে তামাকের চাষ হতো। ফলে তামাকের জনপদ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল এই উপজেলাটি। তবে সেই দিন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তামাকের জায়গায় ব্যাপকহারে তুলার চাষ হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি বছর দৌলতপুর উপজেলায় দুই হাজারেরও বেশি হেক্টর জমিতে তুলার চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন তুলার সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই তুলা ক্ষেতের দেখা মেলে। তুলা চাষের মাধ্যমে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তুলা চাষ বাড়াতে চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উন্নত জাতের বীজ ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে। তামাক ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কর্মকর্তারা।

আরো পড়ুন:
লঞ্চে অগ্নিকান্ড: মালিকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
নারায়ণগঞ্জে বাস-ট্রেনের সংঘর্ষ, নিহত ৪

তুলা চাষিরা জানান, তামাক এখন তুলার চেয়ে অলাভজনক ফসল। তামাক চাষে পরিশ্রম বেশি এবং উৎপাদনেও অনেক ব্যয়। এ কারণে তারা এ বছর গত বছরের তুলনায় বেশি তুলা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কাঙ্ক্ষিত দামও পাচ্ছেন। হাইব্রিড জাতের রূপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২ তুলার বীজ উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় বিঘা প্রতি ২০-২২ মণ উৎপাদনের আশা এ উপজেলার তুলা চাষিদের।

দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ব্যাঙগাড়ি গ্রামে বিস্তীর্ণ তুলা ক্ষেত। ছবি : দেশ দর্পণ।

জেলার মিল মালিকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে চড়া দামে তুলা কিনতে হচ্ছে। এবার প্রতি মণ তুলা ৩ হাজার ৪শ টাকা দরে ক্রয় করা হচ্ছে। তবে লোকসান হওয়ার কারণে শুকনো তুলা ছাড়া ভেজা ও গুটি যুক্ত তুলা ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে তুলা উন্নয়ন বোর্ড তুলা গবেষণা, এর সম্প্রসারণ, বীজ উৎপাদন ও বিতরণ, প্রশিক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং জিনিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে চাষিদের তুলা উৎপাদন কার্যক্রমে সহায়তা করছেন। ফলে দিন দিন অনেকেই তুলা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। দেশে বর্তমানে যেসব অর্থকরী ফসল রয়েছে তার মধ্যে লাভের দিক দিয়ে তুলা অন্যতম বলে মনে করা হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে তুলার চাষ হয়েছে। হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল তুলা চাষে আগ্রহী কৃষকরা ন্যায্যদাম পেয়ে সন্তুষ্ট। যার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরে তুলা চাষির সংখ্যাও অনেকাংশে বেড়েছে। আগামী বছর আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডিসেম্বর ২৬.২০২১ at ২১:৪৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআস/জআ