লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে অনেকে শরীরে আগুন নিয়েই নদীতে ঝাঁপ দেন

ছবি: সংগৃহীত

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থাকল ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী। গভীর রাতে লঞ্চে আগুন লাগার পর প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই স্বজনদের রেখে নদীতে ঝাঁপ দেন। অনেকে শরীরে আগুন নিয়েও ঝাঁপ দেন নদীতে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা জানান, লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কিছু আগে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে।

আহতরা জানান, আগুনের সঙ্গে ধোঁয়ায় লঞ্চ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এতে সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েন। লঞ্চের ভেতরে থাকা যাত্রীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় পায়ের নিচে পরে অনেকে আহত হয়। যে যেভাবে পেরেছেন আত্মরক্ষার চেষ্টা চালিয়েছেন। প্রাণে বাঁচাতে অনেকেই স্বজনদের রেখে নদীতে ঝাঁপ দেন। কয়েকজনকে শরীরে আগুন নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

রোজিনা আক্তার নামে এক যাত্রী জানান, তার সঙ্গে তিনজন স্বজন ছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে দিশেহারা হয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন। এরপর সাঁতরে তীরে আসেন। তবে সঙ্গে থাকা বাকি স্বজনের খোঁজ তিনি এখনো পাননি।

অগ্নিকাণ্ডে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ। লঞ্চ থেকে লাফিয়ে পড়ে নিজের প্রাণ রক্ষা করেন তিনি। লঞ্চ থেকে লাফিয়ে পড়ার সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে গেছে। বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরো পড়ুন :
দুর্ঘটনার কবলে নোরা ফাতেহির গাড়ি!
লক্ষ মাত্রা চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশী জমিতে সরিষার আবাদ

জানা গেছে, ভোররাত থেকে এ পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৭২ জনকে বরিশাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরের ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজনের ৫০ ভাগ পুড়েছে।

৫০ থেকে ৮০ ভাগ দগ্ধ ২০ জনের মতো রোগী রয়েছেন। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। এছাড়া ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঁচজন দগ্ধ রোগী ভর্তি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতের এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লঞ্চে প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশ যাত্রী ছিল। বহু হতাহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দগ্ধও হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ডের সদস্যরা।

ডিসেম্বর ২৪.২০২১ at ১৫:৩৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রান/রারি