ব্রিটেনের সমান বিশাল হিমবাহটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে

আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে বড় হিমবাহগুলোর একটিতে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

তারা বলছেন, থোয়েইটস হিমবাহের সামনের যে অংশটি পানিতে ভাসতে দেখা যাচ্ছে, আপাতত সেটি স্থির থাকলেও যেকোনো সময় এটি ভেঙে চৌচির হয়ে যেতে পারে।

বর্তমানে বিশালাকার এই হিমবাহ থেকে প্রতিবছরে পাঁচ হাজার টন বরফ মহাসাগরে মিশে যাচ্ছে।

বিশ্বের সমুদ্র সীমায় এর প্রভাব এখনো সামান্য। কিন্তু এই হিমবাহের ওপরের দিকে যত বরফ রয়েছে, তার সব যদি গলে যায়, তাহলে সমুদ্র সীমা ৬৫ সেন্টি মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

এরকম ভয়াবহ বিপর্যয় শত বছরে একবার আসতে পারে। গবেষক দল দেখতে পেয়েছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এই হিমবাহে জমে থাকা বরফ গলার হার অনেক বেড়েছে।

আরো পড়ুন:
ঢাকায় লালগালিচা সংবর্ধনা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে
বালা মুসিবতে আক্রান্ত হলে ইসলামের বিধান

হিমবাহ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক টেড স্ক্যামবোস বলেন, সম্ভবত আগামী এক দশকের কম সময়ের মধ্যেই এই হিমবাহের সামনের অংশে নাটকীয় একটি পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।

অধ্যাপক টেড স্ক্যামবোস ইন্টারন্যাশনাল থোয়েইটস গ্লেসিয়ার কোলাবরেশন প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

থোয়েইটস একটি অতিকায় হিমবাহ। এটির আকার কমবেশি ব্রিটেন অথবা ফ্লোরিডার সমান। গত ৩০ বছর ধরে এটির গলে যাওয়ার গতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

কেন এটি ঘটছে, সেটিও শনাক্ত করতে পেরেছেন গবেষকরা। এর মূল কারণ হলো সমুদ্রের উষ্ণ পানির নিচে প্রবেশ করছে এবং পানিতে হিমবাহটির সামনের অংশকে গলিয়ে দিচ্ছে।

উষ্ণ পানি এটি জমে থাকা বরফকে সংকুচিত আর দুর্বল করে তুলছে। যার ফলে হিমবাহটির গতি বাড়ছে এবং যেখানে হিমবাহ ভেসে থাকে, সেই এলাকা থেকে সরে যাচ্ছে।

এরিন পেটিট বলেন, এটাকে আমি একটা গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনের সঙ্গে তুলনা করতে পারি, যেখানে কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে এবং আস্তে আস্তে সেটা বাড়ছে। হঠাৎ করে গাড়ি একটা ধাক্কা লেগে পুরো কাঁচটা ঝুরঝুর করে ভেঙ্গে পড়তে পারে।

হিমবাহের আকার হিসেবে বিবেচনা করলে প্রভাবিত এলাকা তেমন বড় নয়। কিন্তু এটি নতুন এলাকার দিকে যাচ্ছে, যার মানে হল হিমবাহ থেকে আরও বরফ গলে যাবে।

ডিসেম্বর  ১৫.২০২১ at ১৩:১৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/যত /ইসন