ঢাকায় লালগালিচা সংবর্ধনা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে

তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। আজ বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে তাকে নিয়ে বিশেষ বিমানটি অবতরণ করেছে। এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সস্ত্রীক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের প্রথম বাংলাদেশ সফর হবে এটি।

রাষ্ট্রপতির সফরের খুঁটিনাটি জানাতে আজ রাত ৯টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস থেকে জানিয়েছে ।

আরো পড়ুন:
বুদ্ধিজীবী দিবসে শোক প্রকাশে জাবি ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
ভোলায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আ’লীগ ও পদ থেকে ৮ নেতা বহিস্কার

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষের সমাপনী দিন উদযাপন ও বাংলাদেশ-ভারত মিত্রতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ সফর করবেন। ভারতের ফার্স্টলেডি, রাষ্ট্রপতির কন্যা, ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সাংসদ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।

ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতে কি আলোচনা করা হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব সৌজন্য সাক্ষাতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। কোন কোন বিষয়ে জোর দেয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনা প্রতিনিয়ত চলছে। বাংলাদেশ ভারত সাক্ষাৎ হলেই আমরা আমাদের বিষয়গুলো তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করি।

সংবাদ সম্মেলন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, ভারতের রাষ্ট্রপতির সফরে দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) বিষয় নেই। সফরটা আনুষ্ঠানিকতায় মনোযোগ দেয়া হয়েছে। অন্য প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে বাকি টিকা পেতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। ভারতে মহামারি সৃষ্টি হওয়ার ফলে টিকা আসা বন্ধ হয়েছে। তাদের সুবিধামতো টিকা পাঠাবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক ও সোনালি অধ্যায় চলছে।

ভারত-বাংলাদেশ ভিসা নিয়ে তিনি বলেন, দুই দেশের ভিসা ধীরে ধীরে চালু করা হচ্ছে। একই বছরে প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের বাংলাদেশ সফরে আসা ইতিহাসে বিরল ঘটনা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী ও অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশ-ভারত শুধু সীমান্ত সম্পর্কে আবদ্ধ নয়, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের ভিত্তি রচনা করে। পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো সৃদৃঢ় ও গতিশীল হয়েছে। বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২০২১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ ধরনের সফর দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের খাতায় মাইলফলক অধ্যায় হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে উল্লেখ থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ বুধবার ভারতের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে। বিমানবন্দর থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর কোবিন্দ ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। একই দিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর রামনাথ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের রাষ্ট্রপতি গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। একই দিন বিকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজায় বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত মহাবিজয়ের মহানায়ক অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেবেন। সফরের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর রামনাথ কোবিন্দ ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সদ্য সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। ওই দিন দুপুরে তিনি দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

ডিসেম্বর  ১৫.২০২১ at ১১:৫৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভড/ইসন