যেএনে পারি মুর ভোট মুই দিয়ুম : আদিবাসী ভোটাররা

মুঁই জীবন নানত ভোট দি ন পারং। ভোট কেন্দ্রত গিলি কয় মুর ভোট দিয়া পত্যনয়। এ হতা হুনি মুই খুশি হইত ন পারং। কারণ ভোট মুর অধিকার। মুর ভোট মুই দিয়ুম, যারে খুশি তারে দিয়ুম। কিন্তু দুষ্টু বা-আয়াল মুরে ভোট দিতও ন দে। এবার যেএনে পারি মুর ভোট মুই দিয়ম। (অর্থাৎ জীবনে চমি ভোট দিতে পারি নাই। ভোট কেন্দ্রে গেলে বলে ভোট দিতে হবে না। এতে আমি খুশি নয়। কারণ ভোট আমার অধিকার। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু অসৎ বাঙালীরা আমাকে ভোট দিতে দেই নি। এবার যেভাবে হোক আমার ভোট আমি দেব। কথাগুলো বলেছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ধুইল্যাছড়ি গ্রামের নিংথোয়াই মারমা।

একই ধুইল্যাছড়ির আতুশি মারমা, উসাপ্রু মারমা, লালানগরের ৯নং ওয়ার্ডের ফুইট্ট্যাগোদার বাইনালা এলাকার পংকষ তংচঙ্গ্যা, বগাবিলির সুনীতি চাকমা, ১নং রাজানগরের তারাবুনিয়ার রমাইল্যা চাকমাসহ আরো অনেক আদিবাসী ভোটারেরা।

তারা জানান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের কালিছড়ি, বড়খোলা, পুদুয়া ইউনিয়নের নারিশ্চা, কমলাছড়ি, দুধপুকুরিয়া, রগতিয়া, উদলবুনিয়া, জঙ্গল পোমরা, রইস্যাবিল, ধুইল্যাছড়ি, ফুইট্ট্যাগোদা, তারাবুনিয়াসহ বিভিন্ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ১১ হাজার আদিবাসী ভোটার রয়েছে। কিন্তু যাতায়াত দূরত্ব, স্থানীয় সন্ত্রাসী কিংবা দলীয় ক্যাডারদের কারনে এক যুগ ধরে ভোট দিতে পারেনি স্থানীয় উপজেলা, মেয়র ও ইউপি কোন নির্বাচনে।

আরো পড়ুন:
ঢাকাসহ সারাদেশে রেড অ্যালার্ট জারি
একযোগে ১২ মন্ত্রীর পদত্যাগ, মৃতের সংখ্যা ৪০

ফুইট্ট্যাগোদার রুপন তংচঙ্গ্যা জানান, গত ইউপি নির্বাচনে বাঙালি সন্ত্রাসীরা ভোটের আগের দিন এলাকায় এসে (প্রার্থীর নাম প্রকাশ না করার শর্তে) মার্কায় ভোট না দিলে আদিবাসীদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নাই মর্মে হুমকি দেয়। তারপরও হুমকি উপেক্ষা করে ভোট দিতে কেন্দ্রে গেলে শুনি আমার ভোট আগে দেয়া হয়ে গেছে।

রাঙ্গুনিয়া আদিবাসী উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত মারমা জানান, রাঙ্গুনিয়া বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত ১৭ টি আদিবাসী পল্লীর প্রায় ১৩-১৪টি আদিবাসী পল্লীর কোথাও ভোট কেন্দ্র নেই। দূর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে আদিবাসীদের ভোট কেন্দ্রে যেতে হয়। এ সুযোগে প্রার্থীর স্ব স্ব ক্যাডারেরা ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে আদিবাসীদের ভোটাধিকার হরণ করে। কিন্তু এবার সে সুযোগ নেই। এখন অনেক ইউনিয়নে (লালানগরে) ভোট হচ্ছে ইভিএম পদ্ধতিতে। একজনের ভোট অন্যজনে দিতে পারবে না। তাই এবার যেভাবে হোক যে কোন মূল্যে আদিবাসীরা ভোট দিবে।

এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস বলেন, ভোটকেন্দ্র গুলোতে এবার অধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। অতিতের যে কোন সময়ের চেয়ে এবার সুন্দর পরিবেশে ভোটা গ্রহণ হবে। কঠোর নিরাপত্তায় আদিবাসী ও সংখ্যালঘু ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন। তাই আদিবাসীসহ সকল নারী-পুরুষ ভোটারদেরকে ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে আসার আহবান জানান তিনি।

নভেম্বর ২৪.২০২১ at ১১:৫৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এএম/জআ