জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে শুরু হবে বিপিএল

দিন দিন কমছে করোনার ভয়াভয়তা। মহামারির আকার নেয়া করোনার কারণে এক বছর প্রায় স্থবির ছিল দেশের ক্রীড়াঙ্গন। যেমন- গত বছরের নির্ধারিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হলো এক বছর পিছিয়ে। আইপিএল, পিএসএল কিংবা সিপিএলও অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগের মতোই। এছাড়া সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজও চলছে ঠিকমতো। এবার, জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে বিপিএল।

মোট কথা করোনার তীব্রতা কমে আসার ফলে এখন সবকিছুই স্বাভাবিক হতে চলেছে। ক্রিকেটও পিছিয়ে নেই। জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে হলেও ক্রিকেট সিরিজগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ৪ ডিসেম্বর মিরপুরে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। সপ্তাহখানেক পর কিউইদের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড যাবে বাংলাদেশ। ফিরবে জানুয়ারির প্রথমভাগে।

এরপর আর কোন খেলা নেই মার্চ পর্যন্ত টানা বিরতি। ওই সময়ের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে দেশের সবচেয়ে জমজমাট ঘরোয়া আসর বিপিএল। বিসিবির উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে শুরু হবে বিপিএল। যেহেতু মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর, তাই ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই আসর শেষ করতে হবে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত জানুয়ারির ২০ থেকে ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখ বিপিএলের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিপিএলের সম্ভাব্য সূচি নির্ধারণের খবর নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি নতুন প্রাসঙ্গিক প্রশ্নও উঠে আসছে। তাহলো এবার কীভাবে বা কোন ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে বিপিএল? আগের মতো (২০১৯) মানে শেষবার যেভাবে হয়েছিল সেই আদলে কি হবে?

২০১৯ সালের মতো হলে তাহলে কি সব কিছুই থাকবে বিসিবির হাতে। দল সাজানো থেকে শুরু করে সব কিছুই করবে বিসিবি, শুধু টিম স্পন্সর করবে বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজ? নাকি তার আগের মতো পুরোদস্তুর ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরই হবে এবারের বিপিএল?

এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, এবারো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই হবে বিপিএল। তবে একটা মৌলিক পার্থক্য থাকবে এবার। সম্ভাব্য দল থাকবে ৬ টি। যার মালিকানা, স্বত্ব, ব্যবস্থাপনা এবং খেলোয়াড় সংগ্রহ- সব কিছুই থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হাতে।

এই শুনে মনে হতে পারে, তাহলে বিপিএল আবার পুরোনোদের হাতে ফিরে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরটাও সরাসরি দেয়া কঠিন হবে। ‘হ্যাঁ, বিপিএল আবার পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ফরম্যাটে ফিরে যাচ্ছে, ঠিক। তবে মালিকানা ও দলের স্বত্ব যে সব পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হাতেই থাকবে- তাও বলা যাবে না।

আরো পড়ুন:
দৃষ্টিনন্দন উড়াল সড়কে বদলে যাবে হাওরাঞ্চল
বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমোদন

তবে জানা গেছে, বিপিএলের প্রতিষ্ঠিত ফ্র্যাঞ্চাইজিরা অর্থাৎ বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, জেমকন গ্রুপ এবং অর্থমন্ত্রী ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ আ হ ম মুস্তফা কামালের কন্যা নাফিসা কামাল এবারো ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক থাকছেন।

পুরোন ৪ প্রতিষ্ঠিত ও শীর্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজি হাউজ থাকলেও এবারের ফ্র্যাঞ্চাইজি হওয়ার ক্ষেত্রে নতুন পথে হাঁটছে বিসিবি। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল তথা বিসিবি থেকে এরই মধ্যে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীদের মধ্য থেকে ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজি বেছে নেয়া হবে এবং তার সংখ্যা থাকবে ছয়টি।

এবার এর মধ্যে নতুন আর পুরোনো নেই। যে কেউ বা যে কোনো কর্পোরেট হাউজই ফ্র্যাঞ্চাইজি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। তাহলে ধরা যাক, বিপিএলের পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, জেমকন গ্রুপ এবং নাফিসা কামাল এবারও বিসিবির শর্ত মেনে ফ্র্যাঞ্চাইজি হলেন। তখন কি তারা পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত ফ্র্যাঞ্চাইজি বলে গণ্য হবেন? নাহ! তা হবে না। তবে এবারের চুক্তিটা হবে শুধু এক বছর মেয়াদি।

এক বছরের জন্যই ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্ব কিনতে হবে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে এরই মধ্যে বলা হয়েছে এবং তারা জেনে-বুঝে ও শর্ত মেনেই আগ্রহী হয়েছে যে, এক বছর পর পুরো আসরের পর্যালোচনা হবে। সেখানে কী কী সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন প্রয়োজন? সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ হবে। সে পর্যালোচনা শেষে আগ্রহীদের সাথে ৮ বছরের জন্য নতুন করে চুক্তি হবে।

জানা গেছে, এ শর্ত মেনে এরই মধ্যে বেক্সিমকো ঢাকার, জেমকন গ্রুপ খুলনার, বসুন্ধরা রংপুরের, নাফিসা কামাল কুমিল্লার ফ্র্যাঞ্চাইজি হতে আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং তারা ভিতরে ভিতরে কাজকর্মও শুরু করে দিয়েছেন। এর বাইরে চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজিও নাকি নিশ্চিত। এছাড়া রাজশাহী আর সিলেটের মধ্যে আরও একটি দল হবে। তার ফ্র্যাঞ্চাইজি এখনো অনির্ধারিত। তবে যেহেতু দুই মাসেরও কম সময় বাকি, তাই শিগগির বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত করার কাজ সম্পন্ন হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নভেম্বর ২৩.২০২১ at ২১:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জনি/জআ