যুব বন্ধু ও সফল সংগঠক টঙ্গীর সোহেল রানা

গাজীপুরের টঙ্গীর একটি সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মো. সোহেল রানা। ১৯৮৮ইং সালের ২২শে জুন মো. মকবুল হোসেন ও মোছাম্মত আয়েশা আক্তারের ঘর আলোকিত করে টঙ্গীর নোয়াগাঁও এলাকায় জন্মগ্রহন করেন সোহেল রানা। মকবুল হোসেন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। বড় দুই বোন সেলিনা আলম (৪০) ও ফারজানা আক্তার (৩৭) এর জন্মের পর মো. সেহেল রানার (৩৩) আগমনে আলোকিত হয় মকবুল হোসেন ও আয়েশা আক্তারের সুখের সংসার। ছোটবেলা থেকেই সোহেল রানা খেলাধুলা ও বিভিন্ন সামাজিক কাজে ব্যস্ত থাকতো।

সোহেল রানা ছাত্র জীবন শুরু করেন নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে সোহেল রানা এসএসসি পাশ করে পুবাইল আদর্শ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর টঙ্গী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ডিগ্রী ও ব্যাবস্থাপণার উপর মাস্টার্স শেষে গাজীপুর ল কলেজ থেকে এলএলবি করেন। তিনি ২০১৮ইং সালের ২৬শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার কোতয়ালী থানার এসকে হাসপাতাল এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে গোধূলি আক্তার লাকীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর সোহেল রানা ও গোধুলির সংসারে সুখের বার্তা নিয়ে শেখ সাহল লামীম রোদ্র নামে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার জীবনে নিয়ে আসে কালো ছায়া ২০১৫ইং সালের ২৬শে ডিসেম্বর মাতা ও ২০১৯ইং সালের ৮ই আগস্ট পিতাকে হারান সোহেল রানা।

সোহেল রানা শুধু টঙ্গীবাসীর গর্ব নয় তিনি বাংলাদেশের যুবকদের ভাগ্য উন্নয়নে এক অনন্য দিক নির্দেশক ও একজন সফল সঙ্গগঠক। ভাওয়াল বীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার এমপি’র মৃত্যুর পর তার স্ত্রীর দিক নির্দেশনায় জাহিদ আহসান রাসেল এর সাথে তার নির্বাচনে একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন সোহেল রানা। জাহিদ আহসান রাসেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ২০০৪ সালে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদে সাবেক ১০নং ওয়ার্ডের (বর্তমান ৪৬নং ওয়ার্ড) সভাপতির দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে প্রথম রাজনৈতিক সংগঠনে যোগদান করেন নোগাগাঁওয়ের ছেলে সোহেল রানা।

সোহেল রানা বলেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার আমার শিক্ষক ছিলেন। আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। অত্যান্ত দুঃখের সহিত বলতে হয় ক্ষমতা লোভী বিএনপি জামায়েত এর এজেন্টরা হঠাত করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রিয় স্যারকে নিরসংসভাবে হত্যা করে। আহসান উল্লাহ স্যারের মৃত্যুর আমি ও মাজহারুল ইসলাম মাসুম ভাই দুইজন প্রত্যাক্ষদর্শী হিসেবে সারা বাংলাদেশে মিডিয়াতে বক্তব্য ছিয়েছি। এরপর ২০১৫ইং সালে আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের টঙ্গী থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত আছি। তবে যেহেতু বাংলাদেশ ছাত্রলীগে বিবাহিতদের কোন অগ্রাধীকার নেই তাই বিয়ের পর থেকে আমি যুবলীগের সাথে সম্পৃক্ত আছি।

আমি যেহেতু টঙ্গী থানা পর্যায়ে রাজনীতি করেছি তাই আমার অনুসারি ও ভক্তদের অনুরোধে যুবলীগে থানার সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশা করছি। আমার প্রিয় নেতা ১৯৮৮ সালে নোয়াগাঁওয়ের স্থানীয় যুবকদের নিয়ে নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজ কল্যান সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ২০১৫ইং সালে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ভাই নতুন করে কমিটি করে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। আমরা ২০১৫ইং সালে সমাজসেবা ও ২০১৮ সালে যুবতে রেজিস্টেশন লাভ করি। এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সময়ে অসহায়দের আর্থিক অনুদান, শীতবস্ত্রসহ বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করে আসছি। যুবকদের কৃষি, মৎস্য ও গবাদিপশু পালনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্তকর্মী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিয়মিত প্রশিক্ষন দিয়ে যাচ্ছি।

আরো পড়ুন :
শার্শার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের রাস্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
পেকুয়ায় পাচার কালে কাঁকড়ার বস্তায় মিললো ৪ হাজার ৫ শ পিস ইয়াবা, আটক ২

সংগঠনের উদোগে রক্তদান কর্মসূচি, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন চলমান রয়েছে। এছাড়া আমি প্রতিবন্ধিদের নিয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সংগঠন ‘এনএফএভিএইচ’ এ কার্যকরী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া আপনারা জানেন যে শারীরিক প্রতিবন্ধিদের তৈরি দেশের সেরা কোমল পানি মুক্তা পানি নিয়ে আমি কাজ করছি। আমি গত চার বছর যাবত ডিলারের দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ইন্টারনেট ব্যাবসা পরিচালনা করছি। টঙ্গীর নদী বন্দর এলাকায় কয়েকজন সহযোদ্ধা নিয়ে বন্দর ইন নামে একটি হোটেলের কাজ শুরু করেছি।

আমার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অসংখ্য যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করেছি। আমার স্বপ্ন প্রথম পর্যায়ে গাজীপুরে যতগুলো সামাজিক সংগঠন রয়েছে সকলকে নিয়ে একযোগে সামাজিক উন্নয়নে কাজ করা। আপনারা জেনে খুশি হবেন আমার সহকর্মীদের সহযোগিতায় এবারের যুব দিবসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আত্মকর্মসংস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ ২২ জন আত্মকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ৫ জন যুব সংগঠক অর্থাৎ মোট ২৭ জন সফল যুবককে জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২১ দেওয়া হয়। যার মধ্যে আত্মকর্মী (সারা দেশ) ক্যাটাগরিতে আমি ২য় পুরস্কার পেয়েছি। সকলের দোয়া ও সহযোগীতা নিয়ে আগামী দিনগুলো গরীব, অসহায় ও যুবক ভাইদের নিয়ে কাজ করে যাবো।

নভেম্বর ২১.২০২১ at ১৭:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শেরাহা/রারি