চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গোলযোগ, নিহত ১

যশোরের চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গোলযোগে শওকত আলী খান (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি নিহত হয়েছেন নাকি স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানোর জন্য থানায় নিয়েছে। একইসাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীন (৪০) ও তার ছেলে ইমরান হোসেনকে (২০) হেফাজতে নিয়েছে। শনিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ও প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম হোসেন জানান, শওকত আলী খান শনিবার গ্রামের সেলিম হোসেনের বাড়িতে রাজমিস্ত্রীর সহকারীর কাজ করছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিবেশী পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরান ঘটনাস্থলে এসে শওকতের শ্যালিকার নিকট পূর্বের পাওনা ১৯শ টাকা ও ৭ কেজি চাল চান। এনিয়ে উভয়পক্ষে তর্কাতর্কি হয়। এসময় পলি পারভীন গালিগালাজ করলে শওকত আলী রাগান্বিত হয়ে নিজ বাড়ি থেকে ছেলেদের ডেকে নিয়ে এসে বিতন্ডায় জড়ান। উভয়পক্ষের বিতন্ডার সময় তাঁড়া খেয়ে পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরান দৌড়ে নিজেদের ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।

এসময় শওকত আলীর ছেলেরা পলি পারভিনের ঘরে ইট ও লাঠি নিয়ে হামলা করলে তারা ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চান। অন্যদিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শওকত আলী সেলিমের বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে থাকেন এবং পাশ্ববর্তী লতিফা বেগম (৫০) অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা শওকত আলীকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দুপুর ১২.৪০ মিনিটে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুর ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতাল থেকে সেলিম হোসেন মৃতদেহটি গ্রামে নিতে চেষ্টা করলে পুলিশ সংবাদ পেয়ে সেটি উদ্ধার করে চৌগাছা থানায় নেয়। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। ঘটনাস্থলে থাকা নিহতের শিশু সন্তান শাওন (৬) বলেন, একটি ইট বুকে লেগে আব্বা পড়ে যায়।

আরো পড়ুন :
তাহিরপুরে ভারতীয় চোরাই কয়লার চালান জব্দ, আটক ৪
রাঙ্গুনিয়ার লালানগর নৌকার প্রার্থীর পক্ষে যুবলীগের নির্বাচনী সভা

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুর ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তিরা তিনি মারধরে আহত বা নিহত হয়েছেন এমন কিছুই বলেন নি। মৃত ঘোষণার পর তারা স্বাভাবিক মৃত হিসেবেই তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যান।

ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, মৃতদেহটি উদ্ধার করে সুরাহতল করা হয়েছে। সেটিতে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন কিনা তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।

তবে স্থানীয়রা জানান, ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে শওকত আলীর বড় ভাবী সাদিয়া খাতুন এবং প্রতিবেশী পলী পারভীন উভয়েই নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে পলীকে শওকত আলী ভোট না দেয়ায় এটি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিলো। তার জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে।

নভেম্বর ২০.২০২১ at ২০:৩৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোমই/রারি