বুনোহাতি হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে পাপেট প্রদর্শনী ও মানববন্ধন

দেশের বিভিন্ন স্থানে বুনোহাতি হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন ও সচেতনতামূলক পাপেট প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১:৩০ এ “ডীপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন” এর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ পাপেট প্রদর্শনী ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় । এতে সংগঠনটির অর্ধশতাধিক সচেতন নাগরিক অংশগ্রহণ করে।

মানববন্ধনে হাতি হত্যার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সচেতনার বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ডিইএসআরএফের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, যেখানে একটি হাতিকে প্রজননক্ষম হতে ৮ বছর সময় লাগে ও বাচ্চা প্রসব করতে ২২ মাস সময় লাগে সেখানে দেশের বিভিন্ন স্থানে অহরহ বুনো হাতি হত্যা করা হচ্ছে। কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৫ টি মৃত হাতি শনাক্ত করা হয়েছে। দেশে এখন হাতির সংখ্যা ২৫০ এর কিছু বেশি হবে। এরকম একটি বিপন্ন প্রজাতিকে এভাবে নির্যাতন করতে থাকলে, মেরে ফেলা হলে কিছুদিন পর আর জীবন্ত হাতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে পাপেট শো-সিনেমা দেখে হাতি চিনতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যদি আমরা চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম হাতি দেখতে পাক, বাংলাদেশের ইকোসিস্টেম সুস্থ্য থাকুক তাহলে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। শুধু নিজেরা সচেতন হলে হবে না অন্যদেরকে সচেতন করতে হবে।

এসময় কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার সচেতনামূলক পাপেট প্রদর্শনী করে। আসাদুজ্জামান আশিক, তানভির তারেক, সোহানা তানজিম, জারিন তাসনিম তুলতুল, নুসরাত জাহান শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। পাপেট প্রদর্শনীতে হাতি রক্ষায় এগিয়ে আসা ও হাতির প্রতি সহানুভূতিশীল হতে আহ্বান জানানো হয়।

আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় এসএসসি পরীক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে অসহায় পিতার সংবাদ সম্মেলন
খালেদার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে শিক্ষক ফোরামের বিবৃতি

পাপেট প্রদর্শনী শেষে কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আশিক বলেন, আমরা গল্পের মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছি যে, আমরা বনভূমি ধ্বংস করছি, বনের খাবার নষ্ট করছি। ফলে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে। পরে আমরা আমরাই আবার সেই হাতিকে মারছি যা পরিবেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার জনসচেতনতা তৈরীতে পাপেট প্রদর্শনী সহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করছি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় পাচঁটি মৃত হাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর প্রতিটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। সোজা কথায় মানুষ হত্যা করেছে। এটি খুব আশংকাজনক একটি সংবাদ। এখনই সচেতন না হলে খুব দ্রুতই আমাদের দুঃস্বপ্ন দেখতে হবে।

সংগঠনটির প্রশংসা করে অধ্যাপক আরো বলেন, ডীপ ইকোলজির এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বস্তরের সচেতনতার পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করি ডীপ ইকোলজির মত সবাই এগিয়ে আসবে।

নভেম্বর ১৭.২০২১ at ১৮:৩৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নউ/জআ