পেকুয়ায় বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী সুমি

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে ৭ম শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া জন্নাত সুমি (১৪)। এই অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক কিশোরী ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে ঠিকফর্দ চুড়ান্ত করেছে কনের পরিবার।

সুমাইয়া জন্নাত সুমি রাজাখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মাতবরপাড়ার সৌদিপ্রবাসী রুস্তম আলীর মেয়ে ও রাজাখালী ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সুমাইয়া জন্নাত সুমির বিয়ে চুড়ান্ত হয়ে গেছে। আগামী শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সুমির বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের হাজীর পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও আরবশাহ বাজারের ব্যবসায়ী ফজল কাদের সওদাগরের পুত্র আজমগীরের সাথে। বর প্রাপ্ত বয়ষ্ক।

পাশাপাশি বর রাজাখালী ইউনিয়নের আরবশাহ বাজারের একজন ব্যবসায়ী। ধনাঢ্য ব্যবসায়ীকে হবু বর হিসেবে পেয়ে মেয়েটির মা-বাবা তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে অনেকটা বাধ্য করছে বলে নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করেছেন। সুমাইয়া জন্নাত সুমি বয়সে কিশোরী। এখনো বিয়ে করার মত বয়স হয়নি মেয়েটির। অভিভাবকরা মেধাবী ওই ছাত্রীকে বাল্য বিয়েতে বাধ্য করছেন বলে স্থানীয়রা দাবী করছেন।

স্থানীয়রা জানান, স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া জন্নাত সুমির সাথে আরবশাহ বাজারের ব্যবসায়ী আজমগীরের বিয়ে হতে কিছু দিন আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে এনগেইজমেন্ট হয়েছে। পাত্র পাত্রী দেখাদেখির সময় বরপক্ষ কনেকে উপহার সামগ্রীও পৌছিয়ে দিয়েছে।

আরো পড়ুন :
এবার ভিডিও গেমের চরিত্রে মেহজাবিন
শুরুতেই বিদায় লিটন-নাঈম

শুক্রবার ২৯ অক্টোবর বিয়ের আনুষ্টানিকতার দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। সুমাইয়া জন্নাত সুমি রাজাখালী ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী।

এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে এ প্রতিবেদক বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তথ্য সংগ্রহের সময় দেখা গেছে, সুমাইয়া জন্নাত সুমি ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। ওই বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর খ শাখার ছাত্রী সুমি। তার রোল নং ৯৫। ২০১৯ সালে সুমি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তার বয়স ১৪ বছর।

সুমির মা নাসিমা বেগম জানান, মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নন। বয়স ১৮ বছর পূর্ন হয়েছে। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ নিয়েছি। ১৮ বছর বয়স হয়েছে এমন সনদটি খতিয়ে চাওয়া হলে তবে তারা সনদটি দেখাতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, আসলে বয়স হয়নি। আমাদের ধারণা মেয়েটিকে বিয়ে দিতে তারা জাল জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রস্তুত করেছে। সেটি উপস্থাপন করে কাবিন সম্পাদন করবে।

ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বিষয়টি আমাকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা বিয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। তিনি আরো বলেন আমাদের কোন ছাত্রী বাল্য বিয়ের মতো জটিল পরিস্থিতিতে পড়বে সেটি আমরা মোটেই সমর্থন করবো না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমা জানান, কোন অবস্থাতেই বাল্য বিয়ে হতে দেওয়া হবেনা। এটি সামাজিক অবক্ষয়। আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

অক্টোবর ২৭.২০২১ at ১৯:২৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমজু/রারি