সিংগাইরে ইউপি নির্বাচনের দলীয় প্রতীক বরাদ্ধ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতিক বরাদ্ধের তালিকা প্রেরণে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও চান্দহর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দূর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগের নেত্রী।

অভিযোগে প্রকাশ- মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোসা. শোভা রহমান।

দলীয় প্রতীক পেতে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সকলের কাছে প্রস্তাব করেন এবং তৃণমূল থেকে শোভার নাম প্রেরণ করবে বলেও আশ্বাস দেয়া হয়। পরে দলীয় প্রতীকের বরাদ্ধ পেতে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক শহীদুর রহমান শহীদ তার কাছে ৫০ লক্ষ টাকা দাবী করেন। তিনি এ টাকা দিতে অস্বীকার করেন।

পরে তিনি জানতে পারেন যে, দলীয় প্রতীকের জন্য তৃণমূল থেকে মোসা. শোভা রহমানের নাম প্রেরণ করা হয়নি। অপরদিকে যারা আওয়ামী লীগ করেন না তাদের নামও তালিকায় প্রেরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

আরো পড়ুন :
সারাবিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির বাংলাদেশ -তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামীলীগের নাম ভাঙিয়ে ধান্দাবাজি করা যাবে না-এমপি প্রিন্স

শোভা রহমান বলেন, বিএনপি পরিবারের লোক বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদলের নাম তৃণমূল থেকে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্বেও আমার নাম প্রেরণ করা হয়নি। বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল ১০ বছরে চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এলাকার বিভিন্ন কাজের জন্য কমিশন নেয়া, সরকারী জমি, স্কুলের জমি আত্মসাৎ করা, তিন ফসলী জমিতে ৩১টি ইটভাটার অনুমোদন দিয়ে তা থেকে মাটি বিক্রি করা, ওয়ারিশান সার্টিফিকেট প্রদানে অনিয়ম, সরকারী বরাদ্ধ থেকে টাকা আদায় করা, দলের শৃংখলা ভঙ্গ করে জামাত-বিএনপিকে পুনর্বাসন করা, এলাকায় না থেকে ঢাকা অবস্থান করাসহ বিভিন্ন দূর্ণীতিতে জর্জরিত। বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদলের পরিবারের সকলে বিএনপির আদর্শের রাজনীতিতে জড়িত রয়েছেন।

শুধুমাত্র শওকত হোসেন বাদল বিএনপি পরিবার থেকে এসে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন এবং তিনি বর্তমানে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে সুবিধা নিয়ে তিনি অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তার বাবা শাহজাহান মিয়া মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী লোক ছিলেন। ২০০৭ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা কারাবরণ করা কালীন সময় শওকত হোসেন বাদল গণ স্বাক্ষরের পাতায় স্বাক্ষর করেননি। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শওকত হোসেন বাদল নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন যা সর্বজন বিদিত। তিনি এলাকার ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছেন।

প্রকল্পে দূর্নীতি করে ঢাকায় বাড়ি করে এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের পদ-পদবী ব্যবহার করে সুবিধা নেয়ায় এবং সমালোচিত হওয়ায় এবার সকল নেতা-কর্মীরা পরিবর্তন চেয়েছিলেন। কিন্তু, দলীয় প্রতিক বরাদ্ধের তালিকায় দূর্ণীতি হওয়ায় সাধারণ নেতা-কর্মী ও জনগণের আশা ধুলিস্মাৎ হয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শহীদ বলেন, আমি কোন মনোনয়ন বাণিজ্য করিনি এবং আমি কারো কাছ থেকে এ বাবদ টাকা গ্রহণ করিনি। দলীয় কোন্দলের কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে।

সিংগাইরের চান্দহর ইউপির চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদলকে এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অক্টোবর ১০.২০২১ at ১৫:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সাহো/রারি