টিয়ার খোঁজে ৫০হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা

অনেকে মানুষ শখ করে টিয়া পাখি পুষে থাকেন। আর সেই শখের পাখিটি যদি হারিয়ে যায় তাহলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়। কথা বলতে পারার কারণে টিয়া পাখি সবাই পুষে থাকেন। রাজধানীর গুলশানের এক মালিকের শখের টিয়া পাখিটি হারিয়ে গেছে। হারানো পাখিকে ফিরে পেতে অভিনব পদ্ধতির পথ বেছে নিয়েছেন পাখির মালিক।

দেয়ালে দেয়ালে পাখি হারানোর নজর কাড়া পোস্টার। সেই পোস্টারে ‘পাখি হারানো বিজ্ঞপ্তি’ নামে একটি শিরোনাম চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে পোস্টারে উল্লেখ করা হয়, সন্ধানদাতাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। শখের টিয়া পাখিয়ে ফিরে পেতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন পাখিটির মালিক ফাইজা ইব্রাহীম।

পোস্টারটিতে আরও লেখা রয়েছে, ‘কিউই (টিয়া) পাখিটি নিজের নাম বলতে পারে’। বিবিসি বাংলার একটি বিশেষ প্রতিবেদনে পাখি হারানোর এই পোস্টারের তথ্য জানানো হয়েছে।

গুলশান-১ এর বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে জানান, তার শখের টিয়া পাখিকে তিনি কিউই নামে ডাকতেন।

তিনি বলেন, পোষা পাখিটি ছেড়ে দেওয়া থাকত। বাড়ির সবার প্রিয় হওয়ার কাঁধে কাঁধে ঘুরে বেড়াত। রাতের বেলা শুধু খাঁচায় থাকে। গত শনিবার (৩ অক্টোবর) সকাল ৯টার পর থেকে পাখিটা নিখোঁজ। যারা পাখি পোষেন তারা জানেন যে পাখি হারিয়ে গেলে সেটা খুঁজে পাওয়া কতটা কঠিন।

ফাইজা ইব্রাহিম বলেন, টিয়া পাখি ছাড়াও তার একটা পোষা কুকুর ও বিড়াল আছে।

২০১৮ সালে সান কন্যুর প্রজাতির এই টিয়া পাখিটি কেনেন ফাইজা। সান কন্যুরের পাখির জন্ম দক্ষিণ আমেরিকায়। এটি মূলত একটি কেজ বার্ড বা খাঁচায় পোষা পাখি। বাংলাদেশে আমদানি করার পাশাপাশি অনেকেই প্রজনন করে বাচ্চা বিক্রি করেন।

ঢাকার একটি পোষা পাখির দোকান থেকে জানা গেছে, পূর্ণবয়স্ক একজোড়া প্রজননক্ষম সান কন্যুরের দাম ৫০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে একটির দাম ২৫ হাজার টাকা। আর প্রজননক্ষম না হলে প্রতিটি সান কন্যুরের দাম ২০ হাজার টাকা। আর নবজাতকের দাম ১২ হাজার টাকার মতো।

তাহলে একটি পাখি খুঁজতে কেন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফাইজা জানান, এ নিয়ে এই পাখিটি তার কাছ থেকে তিনবার হারাল।

আরো পড়ুন:
হাড়কে শক্তিশালী রাখে যেসব খাবার
কাশ্মীরে তিনজনকে গুলি করে হত্যা

এ বিষয়ে ফাইজা বলেন, ‘প্রথমবার যখন হারিয়ে গেছে তখন আমি পোস্টার দিয়েছিলাম। বাসার পাশেই কন্স্ট্রাকশনের কাজ চলছিল। তারা পেয়েছিল। আমি তাদের ১৪ হাজার টাকা দিয়েছি। দ্বিতীয়বারেও পোস্টার দিয়েছি। যারা পেয়েছিল তারা টাকা নিতে চায়নি। কিন্তু আমি উপহার দিয়েছি’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে টাকার চেয়ে বড় হল পাখিটাকে পাওয়া। আমি টাকার অঙ্কটাও বেশি দিয়েছি। কারণ একটা মানুষ কষ্ট করে পাখি খুঁজে দেবে তার অবশ্যই পুরস্কার পাওয়া উচিত’।

ইতোমধ্যে ৪০টার মতো ফোন কল পেয়েছেন তিনি। যারা সবাই পাখিটিকে খুঁজে দিতে চেয়েছেন টাকার বিনিময়ে। মূলত, পাখিটিকে খুঁজে দিলে আসলেই টাকা দেওয়া হবে কি না এটি জানতেই অনেকে ফোন দিয়েছেন ফাইজার কাছে।

ফাইজা বলেন, ‘তারা বলছেন টাকাটা তাদের দরকার। পাখি খুঁজে দিলে আমি আসলেই টাকা দেব কি না এটাও অনেকে জানতে চাচ্ছেন। আমি তাদের কে নিশ্চয়তা দিয়েছি। আমি আসলে চিন্তায় আছি যে এই পাখিগুলো উন্মুক্ত পরিবেশে বাঁচতে পারে না। তৃতীয়বারের মতো আমি সৌভাগ্যবান হব কি না জানি না’।

অক্টোবর ০৬.২০২১ at ১০:৩৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ