হরিণাকুন্ডুতে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জলাশয় পুন:খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন

বর্তমান সরকারের অর্থনীতির চাঁকা সচল রাখতে মৎস্য চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঝিনাইদহের হরিণাকুতে মৎস্য অধিদপ্তরের অধিনে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

২০২০-২১ অর্থ বছরে হরিণাকুন্ডু উপজেলায় পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়া সোনাতনপুর বাওড়ে ৩১ লাখ, কাপাশহাটিয়া বাওড়ে ৭৫লাখ, নারায়নকান্দি বাওড় ও পুকুরে ৬লাখ ২০হাজার এবং গাড়াবাড়িয়া সরকারী পুকুর খননে ৪লাখ ৮৬ হাজার টাকার অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্য চাষের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে।

এসব জলাশয় গুলি খননের পূর্বে বছরে ৩-৪ মাস পানি ধরে রাখতে পারতো। এখন পুনঃখননের ফলে ১২ মাসই মাছ চাষ করা যাবে। ফলে মাছের উৎপাদন আগের চেয়ে দ্বিগুন বৃদ্ধি পাবে এবং প্রায় ৫হাজার মৎস্যজীবী ও প্রান্তিক মৎস্য চাষীদের কর্মসংস্থানসহ দারিদ্র বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কাপাশহাটিয়া বাওড়ের পার্শ্ববর্তী জমি ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে।

বর্ষাকালে প্লাবিত হলে বাওড়ের মাছ ওইসব জমির মালিকগণ জাল, ছিপ দিয়ে ধরে নিত যার ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায়ই বিরোধ সৃষ্টি হতো। পুনঃখননের কাজ শুরু করার পূর্বে উপজেলা ভূমি অফিসের মাধমে নিষ্কন্ঠক জমির সীমানা নির্ধারন করে নেওয়া হয় ফলে বাওড়ের পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের হস্থক্ষেপ না থাকায় সুষ্টু ব্যবস্থাপনায় মাছ চাষ করা হচ্ছে।

সোনাতনপুর বাওড় পুনঃখননের ফলে বাওড়টির দুই পাড় দৃষ্টি নন্দন হয়েছে। বাওড়ের সুফলভোগী মৎস্যজীবীদের সাথে আলাপ করে জানা যায় বাওড়ের গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মৎস্য উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। বাঁধের উপর মাটি দেওয়ায় বাঁধটি মজবুত হয়েছে এখন তার উপর দিয়ে দুই পাশের গ্রামের লোকজন চলাচল করে। পাশেই হাই স্কুল অবস্থিত তাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকগণও এই বাঁধের উপর দিয়ে যাতায়াত করে।

আরো পড়ুন :
লম্বা হওয়ার ৮ উপায়
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়োগ দেবে ২০০ জন

২৭ সেপ্টেম্বর মৎস্য বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ড. আলীমুজ্জামান হরিণাকু উপজেলার এসব প্রকল্প পরিদর্শন করেন এবং খননকৃত জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও ফলজ বৃক্ষরোপন করেন। এছাড়া উন্নয়নকৃত জলাশয়গুলোর সুফলভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

এসময় তিনি বলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর পুনঃখননেন ফলে ভরাট হওয়া বাওড় গুলো আবার তার নাব্যতা ফিরে পেলো এত মাছের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধিপাবে তেমনি এলাকাবাসীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলফাজ উদ্দীন শেখ, কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরাফদৌলা ঝন্টু, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, বিভাগীয় মৎস্য প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, উপসহকারী প্রকৌশলী সোহেল আহাম্মেদসহ মৎস্যজীবী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলায় মৎস্য চাষের উপযোগী অনেকগুলি বাওড়, খাল, পুকুর রয়েছে। মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে মৎস্য অধিদপ্তর যদি ভরাট হওয়া এসব জলাশয় গুলি পুনঃখনন এর ব্যবস্থা করে তাহলে অত্র এলাকাসহ দেশের মৎস্য উৎপাদন ও দারিদ্র বিমোচনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে বলে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।

অক্টোবর ০১.২০২১ at ১৯:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কালি/রারি