নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত ফোরলেন সড়ক নির্মানের পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে শহরে টান টান উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ফোরলেন সড়ক বাস্তবায়নের পক্ষে আন্দোলনকারিরা বিপক্ষে আন্দোলনকারিদের ওপর হামলা চালায়।
এসময় জেলা যুবলীগের আহবায়ক এবং ফোরলেন নির্মানের বিপক্ষে আন্দোলনকারিদের নেতা মো. ওয়াহিদুজ্জামানের জীপগাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শহরের বিভিন্নস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে মানববন্ধনে অংশগ্রহনের জন্য উভয় পক্ষের লোকজন আসতে শুরু করে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উভয় পক্ষ নড়াইল শহরের বানিজ্যিক এলাকা রূপগঞ্জে (একইস্থানে) মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয়।
নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত ফোরলেন সড়ক নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার পিতা গোলাম মর্তুজা স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সরদার আলমগীর হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও সাধারণ সম্পাদক এস এম পলাশ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রকিবুজ্জামান পলাশ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ আশরাফুজ্জামান মুকুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধন প্রমূখ।
অপরদিকে, নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত ফোরলেন সড়ক নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান, রূপগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক সিকদার নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার দিনব্যাপি ধর্মঘট পালন (দোকানপাট বন্ধ) করেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
এদিকে জেলার সকল উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা ও সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নড়াইলের মানুষকে অপব্যাখ্য দিয়ে ভুল বোঝানো হয়েছে যে, ‘পদ্মাসেতু পার হয়ে ভাটিয়াপাড়া-কালনা-লোহাগড়া-নড়াইল-যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে চলেছে। সে কারনে নড়াইল শহরের মধ্যদিয়ে ফোরলেন সড়ক নির্মানের প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ, পদ্মাসেতু প্রকল্পের ৬ লেন সড়ক ভাঙ্গা থেকে ভাটিয়াপাড়া-লোহগড়া-নড়াইল (শহরের দক্ষিণপাশ দিয়ে)-যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত নির্মান করা হবে।
এছাড়া শহরের মধ্যদিয়ে প্রস্তাবিত ৫.৮০ কি. মি. ফোরলেন সড়কের চিত্রা নদীর অংশে কোন সেতুর প্রস্তাব নেই এবং চিত্রা নদীর রাসেল সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে যশোর অভিমুখি ১.২০ কি. মি. সড়ক ১০.৩০মিটার প্রস্থ ও বাকি ৪.৬০ কি. মি. সড়ক ১৯.৪৫ মিটার প্রস্থ করে নির্মানের প্রস্তাব করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ৮টায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রস্তাবিত ফোরলেন সড়ক নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার পক্ষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের এক প্রস্তুতি সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. গুবাস চন্দ্র বোস ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস আন্দোলনকারিদের সাথে একমত পোষণ করেন।
সেপ্টেম্বর ২৭.২০২১ at ১৮:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শুস/রারি