পায়রা সেতুতে মাত্রাতিরিক্ত টোল নির্ধারণে বিতর্ক!

দক্ষিনাঞ্চল বাসির স্বপ্নের লেবুখালী পায়রা সেতুতে মাত্রাতিরিক্ত টোল নির্ধাণে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহনের মালিক শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে পায়রা সেতু পারাপারে অতিরিক্ত টোল নির্ধারণের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বিতর্কের ঝড় বইছে।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পায়রা সেতুর টোল নির্ধারণ করেছে সড়ক পরিবহন বিভাগ। গত ১৮মার্চ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (টোল অধিশাখা) উপসচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে সেতুটির টোল নির্ধারণ করা হয়। এতে পায়রা সেতুতে ট্রেইলার ৯শ’ ৪০টাকা, হেভি ট্রাক ৭শ’ ৫০টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৩শ’ ৭৫টাকা, বড় বাস ৩শ’ ৪০টাকা, মিনি ট্রাক ২শ’ ৮০টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত যান ২শ’ ২৫টাকা, মিনিবাস-কোস্টার ১শ’ ৯০টাকা, মাইক্রোবাস ১শ’ ৫০টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন ১শ’ ৫০টাকা, সেডান কার ৯৫টাকা, ৩-৪ চাকার যান ৪০টাকা, মোটরসাইকেল ২০টাকা, রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, ঠেলাগাড়ি ১০টাকা হারে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখিত টোলের হার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। চলছে আলোচনা, সমালোচনা।

রাজিবুল রাজ নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, পায়রা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০টাকা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এটিকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে মনে করি। সব মহলের উচিত এটা নিয়ে সরব হওয়া। এটি পুন. বেচনা করার অনুরোধ করছি।

তারেক মলিক নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ফেরীতে দিতাম ৫টাকা, ব্রিজে দিতে হবে ২০টাকা, আমি আবার ফেরী চাই, নয়তো টোল ১০টাকা করতে হবে। না হয় এইটা নিয়ে অনেক কিছু হবে, বলে রাখলাম। আমাদের দাবি একটাই মোটরবাইকের টোল ১০ টাকার মধ্যে চাই। আর.আই.এম অহিদুজ্জামান তার ফেসবুকে লিখেছেন, লেবুখালী সেতু অবশ্যই সরকারের একটি বড় অর্জন! কিন্তু এর টোল নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে।

সব যানবাহনেই টোল বেশি মনে হচ্ছে। নিশ্চয়ই এটা জনগণের পকেট থেকে যাবে। কারণ পরিবহণ ওয়ালারা ভাড়া বৃদ্ধি করে দিবে। আর মোটরসাইকেল ফেরীতে পাড় হতাম ৫পাঁচ টাকায়, সেতুতে ২০ টাকা। এটা রীতিমতো জুলুম। আসুন আমরা লেবুখালী টোল পুন:নির্ধারণের দাবী জানাই….।

এদিকে লেবুখালী ফেরিঘাটে ফেরীপারাপারে মোটরসাইকেল বাবদ ৫টাকা, প্রাইভেটকার ৪০টাকা, যাত্রীবাহী বাস ১০০টাকা, বড় ট্রাক ৩০০টাকা আদায় করা হতো কিন্তু ফেরীর তুলনায় সেতুর টোল দ্বিগুণ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। প্রাইভেটকার চালক মো. রাসেল মিয়া জানান, ফেরিতে আমরা ৪০টাকা দিয়ে পারাপার হতাম।

আরো পড়ুন :
“যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই” বদলে গেছে শান্তির মানে
চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ট্রুডো, কে হচ্ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী

আর এখন ব্রিজে ৯৫ টাকা দিতে হবে যা একেবারে অযৌক্তিক। মোটরসাইকেল চালক আরিফ হোসেন জানান, ফেরিতে সবসময় ৫ টাকা দিতাম এখন ব্রিজে ২০টাকা দিতে হবে- আগেই ভালো ছিলাম। কারণ দিন শেষে যা ইনকাম হতো তার অর্ধেক টোল দিতে হবে। বাস চালক মোমেন জানান, যেখানে ১শ’ টাকা নিতো ফেরি এখন ব্রিজে তার দ্বিগুণ টোল দিতে হবে।

পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. রিয়াজ মৃধা জানান, লেবুখালী পায়রা সেতুর টোল ফেরির তুলনায় তিনগুণ ধরা হয়েছে। এভাবে হলে কেউ গাড়ি চালাতে পারবে না। প্রয়োজনে আমরা অতিরিক্ত টোলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করব।

সড়ক ও জনপথ বরিশাল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, ফেরী ও সেতুর টোলের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সড়ক পরিবহন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে টোল নির্ধারিত হয়ে থাকে। এতে আমাদের কোন হাত নেই।

সেপ্টেম্বর  ২১.২০২১ at ১৭:৪০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোজউ/রারি