সবুজের মাঝে উঁকি দিচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে চারা রোপণের পর ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। প্রকৃতির বৈরি আবহাওয়ার পরেও সম্পুরক সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছেন চাষিরা। কখনো প্রখর রোদ, আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে ধান ক্ষেত পরিচর্যা করছেন কৃষক। বিগত বছরগুলোতে আমন ধান চাষ করলেও এবারের চিত্র ভিন্ন।

মৌসুমের শুরুতে দেখা যায়নি ঠিকমতো বন্যার তেমন প্রভাব। চারা রোপণের পরপরই দফায় দফায় বৃষ্টি আর কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় রোপণ করা চারা দ্রুত বেড়ে ওঠেছে। সবুজে ছেয়ে গেছে ক্ষেত। ভাদ্রের তালপাখা গরম ও হাল্কা হাওয়ায় দোলা খাচ্ছে দিগন্ত জুড়ে সবুজের চাদরে ঢাকা ধান ক্ষেত। সারাদিন কৃষক-কৃষাণী আর কৃষি শ্রমিকের কর্মব্যস্ততায় মুখরিত ফসলের মাঠ। আর দিগন্ত জুড়ে সবুজের হাত সানির মাঝেই উঁকি দিচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।

কৃষকদের স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে ক্ষুধামুক্ত, খাদ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ নির্মাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার। এসব উদ্যোগ বস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা অধিদপ্তর। তাদের আন্তরিকতায় কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। চলতি মৌসুমেও কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষ করছেন উপজেলা নিজপাড়া ইউনিয়নের মাষ্টারপাড়া গ্রামের কৃষক।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ৩৪১, উফশি ৩৭০ ও দেশী জাতের ২ হেক্টর ধান চাষ হয়েছে। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও শ্রমিক নির্ভরতা কমাতে গত মৌসুমে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রায় ৭৫ একর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। আধুনিক চাষ পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সরজমিনে ঘুরে ধান চাষের বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়। উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের বোয়ামারী গ্রামের সতীশ চন্দ্র রায় বলেন, এবছর চারা রোপণের সময় পানির অভাবে আমরা সেচ দিয়ে চারা রোপণ করেছি।

আরো পড়ুন :
টাইপ না করেই মেসেজ পাঠাতে পারবেন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও বসবে নতুন ২২ সিসিটিভি ক্যামেরা

উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের ২৫ মাইল প্রাণনগর গ্রামের কৃষক তাজিমুল ইসলাম জানান, এখন অবশ্য দু-একদিন পরপর বৃষ্টি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে কৃষি অফিস থেকে আমাদের কে বিনামূল্যে সার ও স্বল্পমেয়াদী উচ্চ ফলশী হাইব্রিড এজেড এবং বিনা-১৭ জাতের ধানের বীজ দিয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শ মত বীজ বপন ও রোপণ করেছি।

বর্তমানে ক্ষেতের চেহারা খুব ভালো। আশাকরি অন্যান্য বারের চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পরাবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে বীরগঞ্জ উপজেলায় ২৯২৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্জন হয়েছে ২৯৬০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এখন ক্ষেতের পরিচর্যা ও সার প্রয়োগে কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ ও ক্ষেতের সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করতে পৌরসভার ও উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আমাদের সকল উপ-সহকারী ২৩ জন কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে। কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই উপজেলায় আরও ১১জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রয়োজন। ক্ষেতের বর্তমান অবস্থার কথা উল্লেখ করে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।

সেপ্টেম্বর  ২০.২০২১ at ১৪:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/প্ররাজি/রারি