পড়ে আছে অর্ধকোটি টাকার যন্ত্র, ডেঙ্গু চিকিৎসা ব্যাহত

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ২০ শয্যার ইউনিট খোলা হয়েছে। অথচ রক্তের প্লাটিলেট পৃথকীকরণসহ চিকিৎসাসেবা দিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখা সেল সেপারেট এবং প্লাজমা অ্যাফেরেসিস মেশিন কয়েক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অর্ধকোটি টাকার এই মেশিন পড়ে থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের। দেড়-দুই হাজার টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এই সেবা নিতে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু ইউনিটে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এ পর্যন্ত ৫৪ জন ডেঙ্গু রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মারা গেছেন একজন। ডেঙ্গু রোগীর সেল সেপারেট প্রয়োজন হলেও ভিন্ন কৌশলে তা সম্পন্ন করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সেল সেপারেট মেশিনটি অনেক দিন ধরে অকেজো। মেরামত করে আর চালানো সম্ভব না। নতুন মেশিন ও প্লাজমা অ্যাফেরেসিস মেশিনের জন্য মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত মেশিন পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০২ সালে হাসপাতালে স্থাপন করা হয় সেল সেপারেট মেশিন। এটি দাম ৫০ লক্ষাধিক টাকা। সেই সময়ে কিছুদিন মেশিনটি চলার পর বন্ধ থাকে এক যুগের বেশি সময়। ২০১৬ সালে মেশিনটি আবার চালু করা হয়। কিন্তু তা চালানো যায়নি বেশি দিন। মেশিনটি ২০২০ সালে আবার বিকল হয়ে পড়ে। পরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি চালাচালির পর প্রতিনিধি দল আসে। তারা জানায় মেশিনটি আর ব্যবহার করা সম্ভব না।

হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম তুষার আলম বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সেবার জন্য সেল সেপারেট এবং প্লাজমা অ্যাফেরেসিস মেশিন গুরুত্বপূর্ণ। সেল সেপারেট মেশিনের মাধ্যমে এক ব্যাগ রক্ত থেকে তিনটি উপাদান বের করা হয়। রক্তের লহিত কণিকা, রক্তের তরল অংশ (প্লাজমা) ও রক্তের প্লাটিলেট আলাদা করা হয়। এ ছাড়া প্লাজমা অ্যাফেরেসিস মেশিনের মাধ্যমে রোগীর শরীরে চাহিদা অনুযায়ী সরাসরি প্লাজমা কিংবা প্লাটিলেট প্রবেশ করানো যায়। যা অন্য পদ্ধতিতে করতে গেলে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। মেশিন দুটি রোগীর নানা রকম চিকিৎসায় ব্যবহার হয়।

আরো পড়ুন:
রোববার থেকে প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ
জলবায়ু পরিবর্তন ও অধিপরামর্শ বিষয়ক ২ দিন ব্যাপী দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালার উদ্বোধন

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে রোগীর জন্য সেল সেপারেট মেশিনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রি সেবা দেওয়া হতো। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এই চিকিৎসা নিতে গেলে রোগীদের গুনতে হয় প্রায় দেড় হাজার টাকা।

হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও ডেঙ্গু ইউনিটের মুখপাত্র উৎপল কুমার চন্দ বলেন, ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ৪ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হন রাজু (৩৬)। ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালুর পর তাকে সেখানে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ আগস্ট রাতে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে ওয়ার্ডে ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন।

সেপ্টেম্বর ১৬.২০২১ at ১০:২৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিটি/জআ