বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে কাজ করবে ৭ প্রতিষ্ঠান

বিমানবন্দরে বিদেশগামীদের করোনার র‌্যাপিড টেস্ট (আরটি-পিসিআর) করার কাজ পেয়েছে সাতটি প্রতিষ্ঠান। বুধবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্বাচিত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানায়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এম জেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মর্ডান, জয়নুল হক শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল (প্রা.) লিমিটেড, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড এবং ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রস্তাব করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার তাদের চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় মন্ত্রণালয়। এই সাত প্রতিষ্ঠানকে বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের জায়গা দিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) এবং ল্যাবগুলোর কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় নিদের্শনা জারি করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের কাজ চেয়ে যে ২৩ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল তার মধ্য থেকে সোমবার যে সাতটির প্রতিষ্ঠানের নাম প্রাথমিক সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি, চূড়ান্ত প্রস্তাবে তার তিনটি বাদ পড়েছে। এর পরিবর্তে তিনটি সংযুক্ত হয়েছে। এই তিন প্রতিষ্ঠান হলো আনোয়ার খান মর্ডান, জয়নুল হক শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল (প্রা.) লিমিটেড এবং গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড।

প্রাথমিক সুপারিশ করা তালিকা থেকে বাদ পড়া তিন প্রতিষ্ঠান হলো ল্যাবএইড হাসপাতাল, মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস এবং প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট।

যে সাত প্রতিষ্ঠান বিমানবন্দরে করোনার র‌্যাপিড পরীক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছে, তারা আগামী তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপন করবে। টেস্ট প্রতি এক হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। কার্যাদেশ পাওয়ার ছয় দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া জয়নুল হক শিকদার সর্বনিম্ন এক হাজার ৭০০ টাকা চেয়েছে টেস্ট প্রতি।

সর্বনিম্ন তিন দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া স্টেমজ হেলথ কেয়ার দুই হাজার টাকা চেয়েছে টেস্ট প্রতি। প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তাবে বলেছে, তারা অ্যাকুলার সিস্টেম পয়েন্ট মেশিনের মাধ্যমে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে টেস্টের রিপোর্ট দিতে পারবে।

আরো পড়ুন :
কুড়িগ্রামে করোনা কালিন স্বাস্থ্য বার্তা প্রচারে একদিনের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত
তাড়াইল থানা পুলিশের অভিযানে ১ লক্ষ ১০ হাজার শলাকা নকল বিড়ি ও ডিলার আটক

সিএসবিএফ প্রস্তাবে বলেছে, প্রতিষ্ঠানটি একই সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে সক্ষম। কার্যাদেশ দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপন করতে পারবে তারা। টেস্ট প্রতি এক হাজার ৮৫০ টাকা চেয়েছে সিএসবিএফ। সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০০ টাকা চাওয়া ডিএমএফআর চার দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপন করবে।

প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন সমকালকে বলেছেন, সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ল্যাব স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ফলে অধিক সংখ্যক প্রবাসী দ্রুত পরীক্ষা করে বিদেশের কর্মস্থলের যেতে পারবেন। কে কবে কীভাবে ল্যাব স্থাপন করবে- এ বিষয়টি দেখভাল করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতের শর্তানুযায়ী, যাত্রার ৪৮ ঘণ্টা আগে পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ ফল এলে বিমানবন্দরে প্রবেশ করে বিমান উড্ডয়নের ছয় ঘণ্টা আগে র‌্যাপিড টেস্ট করতে হবে। তাতে নেগেটিভ ফল এলে যাত্রা করতে পারবেন আমিরাতগামীরা।

কিন্তু বিমানবন্দরে করোনার র‌্যাপিড পরীক্ষার সুবিধা না থাকায় কর্মস্থলে ফিরতে পারছে না ৪০ থেকে ৫০ হাজার আমিরাতপ্রবাসী। ল্যাব স্থাপনের দাবিতে তারা প্রায় দুই মাস ধরে আন্দোলন করছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে দুই/তিন দিনের মধ্যে বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বাছাইয়েই লেগে গেলো ১০ দিন।

সেপ্টেম্বর  ১৫.২০২১ at ২৪:১০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সম/রারি