নারী শ্রমিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ, বিজিবির দাবী বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা লাউড়েরগড় বিজিবি ক্যাম্পের গোয়েন্দা সদস্য মোঃ আমির হোসেনের বিরদ্ধে এক নারী শ্রমিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ঘটনাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবী করেছেন বিজিবি। তারা বলছেন সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাকারবারিসহ সংঘবদ্ধ চক্র কোন অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে বিজিবিকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এই অভিযোগ।

এ ঘটনায় নারী শ্রমিকের স্বামী ফুল মিয়া বুধবার(০৮,সেপ্টেম্বর)সুনামগঞ্জ-২৮বিজিবি অধিনায়ক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও এ নির্যাতনের ঘটনায় শাহ-আরেফিন মাজার সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় শতাধিক নারী ও পুরুষ পৃথকভাবে এ নির্যাতনের বিচার দাবি করে সমাবেশ করেন।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়,মঙ্গলবার রাত ১০ টায় এলাকার কিছু বখাটে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে লাউড়েরগড় গ্রামের ফুল মিয়ার স্ত্রী জহুরা বেগমকে বসতবাড়িতে গিয়ে দরজা খোলার জন্য ডাকতে থাকেন এ বিজিবি সদস্য। স্বামী বাড়িতে না থাকায় দরজা খুলতে অপারগতা প্রকাশ করেন জহুরা বেগম।

এ সময় বিজিবি ক্যাম্পের গোয়েন্দা সদস্য ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে জহুরা বেগমের পেটে আঘাত করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। জহুরা বেগমের চিৎকারে প্রতিবেশী নারী রহিমা বেগম(৩৫) এগিয়ে গেলে তাকেও লাঠিপেটা করেন এ বিজিবি সদস্য। রহিমা বেগম বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ মির্জা রিয়াদ হাসান জানান,রহিমা বেগমের পায়ে লাঠির আঘাতে রয়েছে। বর্তমানে ঐ নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে জহুরা বেগম জানান, গত মঙ্গলবার রাত ১০ টায় আমার বাড়িতে এসে দরজা খোলার কথা বলে ডাকাডাকি করে বিজিবির গোয়েন্দা সদস্য আমির হোসেন। স্বামী ঘরে না থাকায় আমি দরজা খুলতে রাজি হইনি। এ সময় আমার ঘরে ভারতীয় কয়লা আছে বলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমার পেটে আঘাত করাসহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন তিনি।

এ ব্যাপারে বিজিবির গোয়েন্দা সদস্য (আর. আই. বি) নায়েক আমির হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করে চোরাই পথে আনা ভারতীয় কয়লা উদ্ধার করেছি।

এ ব্যাপারে লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোঃ আমিনুল হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে সাহিদাবাদ গ্রামের কয়েকটি বাড়ির পাশে বস্তাভর্তি লুকিয়ে রাখা পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৭০ বস্তা মোট সাড়ে তিন হাজার কেজি ভারতীয় কয়লা উদ্ধার করেছি। অন্য কোন ঘটনা আমার জানা নেই।

আরো পড়ুন :
চৌগাছায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড কমিটি গঠন
চৌগাছায় লেখক ভট্টাচার্য্যরে জন্মদিন পালন ছাত্রলীগের

এবিষয়ে সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তসলিম এহসান পিএসসি জানান,আমি এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য আমি আজ সকালে লাউড়গড় এলাকায় এসেছি,কিন্তু ঘটনাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়ায় অভিযোগকারীসহ এলাকার কেউই আমার সামনে সাক্ষ্য দিতে রাজি হচ্ছেন না। এলাকার একটি বালু-পাথর খেকো মহল কোনো অবৈধ সুবিধা নিতে না পারায় আমার বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

সেপ্টেম্বর  ০৯.২০২১ at ২১:৫৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জাআভূঁ/রারি