শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ

যশোরের শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুনরায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তার পক্ষে বিভিন্ন মহল থেকে সাংবাদিকদের কাছে সুপারিশ করা হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেল্থ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের অধীনে শার্শা উপজেলায় প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য একজন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে অনিয়ম, উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দের দুর্নীতি, মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রণোদনায় অনিয়ম ও স্থানীয় জনপ্রতিধির সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ, ইউনিয়ন পর্যায়ে সিআইজি প্রোগ্রামে খামারিদের ট্রেনিং গুলি দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করে আর্থিক দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া, প্রাণিসম্পদ অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জমা রেখে স্থানীয় গরু-ছাগল, হাস-মুরগীর চিকিৎসা দেয়া ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমা আখতারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা যায়, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেল্থ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের অধীনে শার্শা উপজেলায় প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য একজন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে গেল বছর উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের জোহর আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন আবেদনের অযোগ্য হওয়া সত্বেও ঐ পদে তাকে নিয়োগ দেয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ।

উপজেলা পরিচালনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা স্বাক্ষরিত এমন একটি প্রশিক্ষণের চুড়ান্ত তালিকায় ৭৫ জন খামারির নাম উল্লেখ আছে যাদের মধ্যে অনেকেই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন না।

উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে ইমানুর রহমান কাজী ও কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে শফিউল আলম সিদ্দিক জানান, হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষনে তারা উপস্থিত ছিলেন না এবং প্রশিক্ষণের কোন ভাতার টাকা পাননি। কিন্তু তাদের নামে প্রশিক্ষণ ও আনুসঙ্গিক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রণোদনায় অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। উপজেলার গোড়পাড়া গ্রামের কাশেম আলী বিশ্বাসের ছেলে ফয়সালের গোয়ালে কোন গরু না থাকা সত্বেও তিনি প্রনোদনার ১৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। অথচ একই এলাকার গরু খামারি মুনছুর কবিরাজের গোয়ালে সর্বদাই ১১/১২ টা গরু থাকে।

কিন্তু প্রণোদনার টাকা তার ভাগ্যে জোটেনি বলে জানা যায়। মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে উপজেলার কায়বা ইউনিয়নে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রনোদনার তালিকা তৈরীর সময় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ টিংকুর সাথে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অসৌজন্য আচরন করেন বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান।

আরো পড়ুন :
জিয়ার কবর জনগণ রক্ষা করবে: মির্জা ফখরুল
ফুলবাড়ীতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ

ইউনিয়ন পর্যায়ে সিআইজি পোগ্রামে খামারিদের ট্রেনিং গুলি দায়সারাভাবে সম্পন্ন করে আর্থিক দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়। সিআইজি পোগ্রামে মাইকিং, ব্যানার, ডেকোরেশন, নাস্তা, ফ্রি ওষুধ, ভ্যাক্সিন ইত্যাদির ব্যবস্থার নিয়ম থাকলেও করা হয়না কোন কিছুই। কিছুদিন আগে প্রাণিসম্পদ অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জমা রেখে স্থানীয় গরু-ছাগল, হাস-মুরগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল এমন অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ।

সেপ্টেম্বর  ০৬.২০২১ at ২১:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/রারি