শিক্ষার্থীদের টিকা ও স্কুল-কলেজ খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিকেলে

প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর। রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বসছে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। এতে শিক্ষা, কৃষি, তথ্য ও সম্প্রচার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ক্রীড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা আছে। এছাড়া ৬ জন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে যোগ দেবেন।

দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পুনরায় আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনতে সরকারকে অন্তত ৭টি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে আছে-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করা; প্রতিদিনই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্টাফসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা; খোলার আগে সবাইকে টিকার (এক ডোজ) আওতায় আনা; বন্যাদুর্গত এলাকা; উচ্চ সংক্রমিত জেলা; শিখন ঘাটতি দূর করা; ঝরে পড়া, স্থানান্তরিত ও স্কুলবিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেড় বছর বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। আসবাবপত্রে জমেছে ধুলোর পাহাড়। বাথরুমসহ ওয়াশ ব্লক নষ্ট হওয়ার পথে। তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে স্কুল-কলেজ ব্যবহার উপযোগী করা। খোলার পর ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও কঠিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কমবেশি ১০ শতাংশ। ১০-১৫ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সি বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো টিকা পায়নি।

এদিকে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় চলছে বন্যা। বেশকিছু জেলায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জ্ঞানগত ঘাটতি। অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। তাদের মধ্যে কারও বিয়ে হয়ে গেছে, আবার কেউ অর্থ উপার্জনে কাজে জড়িয়ে গেছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা খুবই কঠিন। তবুও কাজটি করতে হবে এর সঙ্গে জড়িতদের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জেলাভিত্তিক অতি-সংক্রমণপ্রবণ এবং বন্যাকবলিত ১৩ জেলা। সংক্রমণপ্রবণ এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোর পরিকল্পনাও নিতে হবে। বিপরীত দিকে শিক্ষার্থীদের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে।

আরো পড়ুন :
সিলেটে উপনির্বাচন, ১৪৯ কেন্দ্রের সব ক’টিতে জয়ী নৌকার প্রার্থী
পিরোজপুর বাজারে ৩ কেজি ওজনের ইলিশ

এ দুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার ক্ষেত্রে প্রশাসন, অভিভাবক ও শিক্ষকের ভূমিকা প্রয়োজন। বিশেষ করে আগের ক্লাসে ঠিকমতো লেখাপড়া না করায় শিক্ষার্থীর যে শিখন-ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণের মূল কাজ শিক্ষকের। আচরণগত পরিবর্তন পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করা জরুরি।

এসব বিষয়ে কথা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া স্থগিত রাখার কৌশল থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশই সরে এসেছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরপরও কী চ্যালেঞ্জ আছে বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আর কী করণীয়-তা নির্ধারণেই রবিবার বৈঠক আছে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

সেপ্টেম্বর  ০৫.২০২১ at ১৪:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/রারি