‘কিস্তির চাপে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে পারি’

‘চলছে করোনার ক্রান্তিকাল। এ পরিস্থিতিতে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাই কষ্ট। না পরছি মা-বাবার চাহিদা পূরন করতে, না পারছি ছোট্ট ছোট্ট সন্তানদের আবদার পূরণ করতে। এরই মধ্যে কিস্তির জন্য চাপ। পরিবার পরিজনদের সামনে অসম্মানজনক কথাবার্তা, খারাপ আচরণ। কি করব বুঝতে পারছি না। তাই এনজিও গণ মিলন ফাউন্ডেশনের চাপে ও অত্যাচারে যে কোন সময় দূর্ঘটান ঘটাতে পারি।’ সোমবার (২আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টায় স্থানীয় সাংবাদিকদের হতাশকণ্ঠে এমনটি জানালেন বাগেরহাটের চিতলমারী সদর বাজরের বই ব্যবসায়ী তাপস কুমার বাড়ৈ (৪০)।

তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্ত্বেও ওই এনজিওর কিস্তির চাপ থেকে বাঁচতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

আবেদনপত্রে জানা গেছে, তাপস কুমার বাড়ৈ চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের রায়গ্রামের বাসুদেব বাড়ৈর ছেলে। চিতলমারী সদর বাজারে তার ভাই ভাই নামে একটি লাইব্রেরী রয়েছে। তিনি একজন শিক্ষিত বেকার যুবক। চাকুরী না হওয়ায় ২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ বিভিন্ন সময়ে লকডাউনের কারনে ২০২০ সাল থেকে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন নাই।

মানুষের তাঁর অনেক টাকা পাওনা থাকলেও তা করোনার কারনে আদায় করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তিনি যখন যে ভাবে পারেন সেভাবে এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করার চেষ্টা করছেন। তাঁর বিভিন্ন এনজিওতে লোন থাকলেও সেই এনজিও গুলো কিস্তির জন্য কোন চাপ প্রয়োগ করছে না। কিন্তু স্থানীয় গণ মিলন ফাউন্ডেশন কিস্তির টাকা আদায় করতে তাঁর বাড়ীতে গিয়ে তাঁর সাথে খারপ আচরণ করছে।

ফলে তিনি মানুষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গণ মিলণ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সময়ে লকডাউনে বন্ধ থাকা সময়ের কিস্তির টাকার জন্য অতিরিক্ত সুদ দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে লকডাউনের মধ্যেও এই সংস্থা কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে।

এই সংস্থার অত্যাচারে সাধারণ লোনী ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। তাই তিনি স্কুল-কলেজ খোলাসহ ব্যবসার পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গণমিলণ ফাউন্ডেশনের কিস্তির টাকা আদায়ের চাপ থেকে মাপ পেতে দাবি জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:
যশোরের হৈবতপুরে বঙ্গবন্ধু ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল
বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু, আহত ৩

এ ব্যাপারে গণ মিলন ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী মোঃ সামছুল ইসলাম বলেন, কিস্তির আদায়ের জন্য তাপসের বাড়িতে আমাদের কোন কর্মী যায় নাই। তাঁর নিকট আমাদের অনেক টাকা পাওনা রয়েছে।গণ মিলন ফাউন্ডেশনের একাউন্ট্স ম্যানেজার সুব্রত কির্ত্তুনীয়া বলেন, তাপস গণ মিলন ফাউন্ডেশন থেকে গত মার্চ মাসে ২ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেন। মাসে তার কিস্তি ২১ হাজার টাকা।

গণ মিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, তাপস নামের কেউ আমার এনজিও থেকে লোন গ্রহণ করেছে কিনা আমার জানা নেই। আমি কোন তাপসকে চিনি না। এমআরএ থেকে চিঠি দিয়েছে ২৫ জুলাই হতে লোন আদায় করা যাবে।তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী বলেন, তাপস কুমার বাড়ৈর আভিযোগটি হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আগষ্ট ০২.২০২১ at ২০:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সসম/জআ