ঢামেকে একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন পিংকি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ৪টি সন্তান জন্ম দিয়েছেন গৃহবধূ ইশরাত জাহান পিংকি (২৫)। চার সন্তানের মধ্যে তিনটি ছেলে ও একটি মেয়েশিশু রয়েছে। রোববার (৪ জুলাই) চিকিৎসকরা জানিয়েছে, চার শিশুই এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে।

সন্তান প্রসবকারী গৃহবধূর বাড়ি কিশোরগঞ্জের তারাইল উপজেলায়। স্বামী সিরাজুল ইসলাম ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আর স্ত্রী পিংকি গৃহিণী। মাহিন নামে ৪বছরের তাদের একটি ছেলে রয়েছে।

স্বজনরা জানায়, পিংকি যখন দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তার গর্ভে ৩ সন্তান রয়েছে। তখনই তার পরবর্তী জটিলতার শঙ্কা করেন সেখানকার চিকিৎসকরা। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য গত ৩ মাস আগে স্বামী সিরাজুল তাকে নিয়ে আসেন উত্তর বাড্ডা সাতারকুল আলীনগরে তার কাছে। সেখানে রেখেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়মিত চেকআপ করছিলেন। তবে ঢাকা মেডিকেল নতুন করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তার গর্ভে ৩টি নয়, আছে ৪ সন্তান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিভাগের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি পিংকি। হাসপাতালে পিংকির মা রমিজা আক্তার বলেন, গর্ভধারণের ৭ মাস চলাকালে গত ১ জুলাই তাকে ঢাকা মেডিকেলের গাইনি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। এরপর শনিবার (৩ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে সিজারের মাধ্যমে পরপর ৪টি সন্তানের জন্ম দেন পিংকি। এখন পিংকি ও ৪ সন্তান সুস্থ আছে।

এদিকে নবজাতকদের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সিজারের পর নবজাতকদের অবস্থা একটু খারাপ থাকায় চিকিৎসকরা তাদেরকে জরুরি ভাবে এনআইসিইউতে নিতে বলেন। ঢাকা মেডিকেলে এনআইসিইউ সিট খালি না থাকায় তাদেরকে গত ৩ জুলাই সিজারের পরপরই নিয়ে যাওয়া হয় ধানমন্ডি রেনেসাঁ হাসপাতালে। সেখানে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাদের।

এরপর ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউতে বেড খালি হওয়ায় রবিবার (৪ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে তাদের ৪ জনকেই এখানে নিয়ে আসা হয়। তবে ধানমন্ডির ওই হাসপাতালে সব মিলিয়ে ৪৮ হাজার টাকা বিল দিতে হয়েছে।

মাসে ১০ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারী সিরাজুলের সেই হাসপাতালের ১দিনের খরচ দিতে করতে হয়েছে দেনা। তবে সন্তান ৪টি সুস্থ থাকায় অনেক খুশি তিনি। এজন্য চিকিৎসকসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সবার কাছে সন্তানদের জন্য দোয়াও চান তিনি।

এবিষয়ে কথা হলে ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাজমুল হক জানান, শনিবার অন্তঃসত্ত্বা পিংকির সিজারের মাধ্যমে ৪টি সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু আমাদের এখানে এনআইসিইউ ব্যবস্থা করতে করতেই স্বজনরা নবজাতক ৪টি বাইরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে আজ এখানে এনআইসিইউ ব্যবস্থা করে নবজাতকদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।

আরো পড়ুন:
কঠোর লকডাউনে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে উপজেলা প্রসাসন ও কালীগঞ্জ থানা পুলিশ
শৈলকুপায় করোনায় কর্মহীন ৬শ পেশাজী‌বির মাঝে মানবিক সহায়তা বিতরণ

তিনি আরও বলেন, অন্তঃসত্ত্বার ৭ মাস বয়সে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাদের ওজন ঠিক আছে। বর্তমানে তারা ভালো আছে। তাদের মাও সুস্থ আছেন। আমাদের চিকিৎসকরা ও আমি নিজেই তাদের খোঁজখবর রাখছি।