বদলগাছীতে আপন ভাবির অর্ধনগ্ন ছবি তুলে ব্লাকমেইল গ্রেফতার-১

নওগাঁর বদলগাছীতে এক গৃহবধু আপন (ভাবি) (৩৮) এর গোপনে মোবাইল ফোনে অর্ধনগ্ন ছবি তুলে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে দুই দেবর। অর্থ না দিলে অর্ধনগ্ন ছবিগুলি ফেইসবুক এর মধ্যেমে ছড়িয়ে দেয়ার বারবার হুমকী দিলে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে অবশেষে মামলা হয়েছে।

অভিযুক্ত এনামুল হোসেন ওরফে মামুন ও ফরহাদ হোসেনের নাম উল্লেখ করে দুই জনের নামে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ঐ গৃহবূধু। মামলার প্রেক্ষিতে এনামুল হোসেন ওরফে মামুন (৩৮) নামের আসামীকে তাঁর নিজ বাড়ির এলাকা থেকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের শর্মাপুর নামক গ্রামে।

থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৭/২৮ বছর আগে ঐ গৃহবধুর বিয়ে হয়। ঐ দম্পতির ঘরে ২টি কন্যা সন্তান আছ। গত ১৪/১৫ বছর আগে এনামুল হোসেন ওরফে মামুন গোপনে ওই গৃহবধূর অশ্লীল অর্ধনগ্ন ছবি তোলেন। পরে ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধুর কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে টাকা আদায় করে আসছিলো। পরে তার ছোট ভাই ফরহাদ হেসেন তার বড় ভাই মামুনের কাছ থেকে ছবিটি পায় ।

ছবিটি পাওয়ার পর একইভাবে ফরাদ হোসেনও ওই গৃহবধৃকে ভয় দেখিয়ে পর্যায় ক্রমে টাকা নিতে থাকে। পরবর্তীতে গৃহবধু তাঁদেরকে আর টাকা না দিতে চাইলে। তারা দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে গৃহবধূ বিষয়টি তার বড় মেয়েকে খুলে বলেন। তখন তার বড় মেয়ে ১ নং বিবাদী এনামুল হোসেন ওরফে মামুন (চাচা) এর নিকট মোবাইল ফোনের মাধ্যেমে ঘটনাটির বিষয়ে জানতে চাইলে। বিবাদী তখন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এবং গত ২৭/৬/২১ ইং তারিখে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে মামানু তার ইমো আইডি থেকে ওই গৃহবধুর বড় মেয়ের ইমো আইডিতে তার মায়ের অর্ধনগ্ন ছবি পাঠায়। এরপর ঐ গৃহবধু ১ জুলাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাত সড়ে ১০ টায় থানায় মামলা দায়ের হয়।

ওই গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকুরী করছিলেন সেই সুবাদে দির্ঘ দিন আমি বাড়িতে একা থাকতাম। এনামুল হোসেন ওরফে মামুন ও ফরহাদ হোসেন আমার স্বামীর আপন ভাই। ১৪/১৫ বছর আগে আমার দেবর মামুন ও ফরহাদ গোপনে আমার অর্ধনগ্ন ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিলো। এবং পরে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখায় সেই ভয়ে আমি তাদেরকে টাকা দিয়ে আসছিলাম। আমার স্বামী রির্টাড করার পর বাড়িতে চলে আসে।

তারপরও তারা আমার কাছে বিভিন্ন সময় টাকার দাবী করলে আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায়। ঐ ছবি আমার বড় মেয়ের ইমোতে দিয়ে দেয় মামুন। বিষয়টি আমার স্বামীর সাথে আমি আলাপ করি। বিনা অপরাধে সম্মান হারাচ্ছি আমি। মামলা করার পর এনামুল হোসেন ওরফে মামুনকে গ্রেফতার করছে থানা পুলিশ। ২য় অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেনকেও গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। আমি জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই।

আরো পড়ুন:
করোনা ভাইরাসে ঝিনাইদহ শৈলকুপায় ১০ দিনে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু
ঝিনাইদহ পাগলাকানায় মোড়ে গাজাসহ একজন গ্রেফতার করেছেন পুলিশ

এবিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধুর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রেকর্ড করে অভিযুক্ত ১নং আসামী এনামুল হোসেন ওরফে মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ২য় অভিযুক্ত আসামী ফরহাদ হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃত মামুনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।