কুরবানী উপলক্ষে পালনকৃত পশু বিক্রি নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় চৌগাছার খামারিরা

মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে থেমে থেমে চলছে লকডাউন, সব কিছুর মত বন্ধ রয়েছে পশুহাট। বর্তমান পরিস্থিতিতে কুরবানী উপলক্ষে পালন করা পশু বিক্রি নিয়ে মহা দুঃশ্চিন্তায় যশোরের চৌগাছার খামারীরা।

পবিত্র ঈদুল আযহা সন্নিকটে, এই সময়ে সব ধরনের খামারীরা দীর্ঘ এক বছর ধরে লালন পালন করা পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করেন। কিন্তু এ বছর এখনও কোন পশু বিক্রি করা বা প্রস্তুতি গ্রহন করা কিছুই সম্ভব হয়নি। লাখ লাখ টাকার পশু আদৌ তারা বিক্রি করতে পারবেন কিনা এ নিয়ে আছেন দুঃশ্চিন্তায়। ঈদে পশু বিক্রি করা সম্ভব না হলে অপুরোনীয় ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন খামারীরা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছায় প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার গরু আর ছাগল আছে প্রায় ২ লাখ। অধিকাংশ পশু কুরবানীতে বিক্রি করার জন্যই প্রস্তুত করেন পালনকারীরা।

সরেজমিন উপজেলার মশিউর নগর গ্রামে যেয়ে দেখা যায়, একটি খামারে ৩০ টি গরু কুরবানীকে সামনে রেখে প্রস্তুত করা হয়েছে। খৈল, ভুষি, ঘাষ আর বিচেলী খাদ্য দিয়ে প্রতিটি গরুকে হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। খামারে ৮০ হাজার থেকে প্রায় ২ লাল টাকা মূল্যের গরু আছে। খামার মালিক ৩ সহোদর পেশায় শিক্ষক, আলাউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম। খামারে দুই জন কর্মচারী সারাক্ষন সমুদয় গরু দেখা শোনার কাজে নিয়োজিত আছেন।

কথা হয় খামার মালিক আলাউদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, প্রায় ৩ বছর হলো তারা গরুর খামার করেছেন। বছরের অন্য সময়ে কম বেশি গরু বিক্রি করা হলেও কুরবানীতে বেশি গরু বিক্রি করেন। কিন্তু এ বছর মহামারি করোনার ফলে কুরবানীতে বিক্রির উদ্যোশে প্রস্তুত করা গরু বিক্রি নিয়ে বেশ দুঃশ্চিন্তায় আছি। কুরবানীর অন্তত ১ মাস আগে থেকেই ক্রেতারা এসে দরাদাম ঠিক করে গরু নিয়ে যেতেন।

অনেক সময় আমরা নিজের থেকেই ট্রাকে করে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে গরু বিক্রি করেছি। এ বছর কোন ব্যাপারী আজও আসেনি আর দেশের বিভিন্ন জেলাতে যাওয়ার তো কোন পরিবশে নেই। একদিকে করোনার থাবা অন্যদিকে চলছে লকডাউন, যার কারনে পশুহাট রয়েছে বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে আদৌ পশু বিক্রি করা সম্ভব হবে কিনা সেই চিন্তায় আছি।

আরো পড়ুন:
সিলেটে করোনায় রেকর্ড ৭ জনের মৃত্যু
করোনা ওয়ার্ডে শিশুর চ্যালেঞ্জিং জন্ম!

তিনি বলেন, খামারে বর্তমানে ৩০ টি গরু আছে, বাজার দর ভাল হলে ৩৮ থেকে ৪০ লাখ টাকায় গরু বিক্রি হবে। আর যদি কুরবানীতে গরু বিক্রি করা সম্ভব না হয় তাহলে প্রতিটি গরুতেই তাকে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে। খামারে প্রতি বছর শুধু গরুর খাদ্য ব্যয় প্রায় ১৮ লাখ টাকা, আর ২ জন কর্মচারীর বেতন দিতে হয় মাসে ২০ হাজার টাকা। কুরবানীতে পশু বিক্রি করা সম্ভব না হলে খামার টিকিয়ে রাখায় কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে বলে মনে করছেন এই সফল খামারী।