বগুড়ার শিবগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মাল্টা

মাল্টা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতে রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডারখ্যাত বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বারি-১ ও বারি-৩ জাতের মাল্টার। শিবগঞ্জে সেই মাল্টা চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের উথলি গ্রামের মাল্টা চাষি শহিদ শেখ (৩৮)। তিনি উথলি গ্রামের মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, মাটির গুনাগুন মান ও চাষ পদ্ধতি ঠিক থাকলে মাল্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১২ হেক্টর জমিতে উপজেলায় ছোট বড় মিলে ২১০টি মাল্টার বাগান আছে। দেশের সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে মাল্টা।

মাল্টাতে বিভিন্ন ভিটামিনসহ রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তার বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। বাগানে রয়েছে প্রায় ১৮০টি মাল্টা গাছ। শুধু তাই নয় মাল্টাসহ তার বাগানে সাথী ফসল হিসেবে লেবু গাছ, কমলা গাছ ও ঢেরসের চাষ। কৃষক শহিদের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শিবগঞ্জের অনেকে কৃষক ঝুঁকছেন মাল্টা চাষে।

শহিদ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্যক্তিগতভাবে ২০১৮ সালে জুলাই মাসে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উথলিতে ৪০ শতাংশ জমি বছরে ২০ হাজার টাকায় বন্দবস্ত নিয়ে মাল্টা বারি-১ জাতের চারা ১২০টি ও মাল্টা বারি-৩ জাতের চারা ৬০টি রোপণ করেন। প্রায় এক বছরেই মধ্যে মাল্টা গাছে ফল ধরে এবং পরবর্তী ৮মাস পর মাল্টা বাজারজাতকরণ করা যায়। প্রতি কেজি মাল্টা ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে।

প্রতি গাছে গড়ে ৭০ থেকে ১০০টি করে মাল্টা ধরে। ৪টি থেকে ৫টি মাল্টার ওজন হয় ১ কেজি কেজি। সে হিসেবে প্রথমবার প্রায় ৩০হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করে শহিদ। এছাড়াও সাথী ফসল থেকে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকার ফসল বিক্রি করে।

মাল্টা চাষি শহিদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ঐ বাগান থেকে ৪০ হাজার টাকার মাল্টা ও সাথী ফসল ২০হাজার টাকা বিক্রি করবো। প্রথমবার সফলতা পাওয়ায় এবছর আরও ৩৫ শতাংশ জমিতে নতুন করে আবারও মাল্টা চাষ শুরু করেছি।

মাল্টা চাষি শহিদ শেখ আরও বলেন, প্রতিটি মাল্টা চারাগাছ ১০০টাকা করে কিনেছি এবং প্রতিমাসে জৈব সার, জিংক, সালফারসহ বিভিন্ন উপকরণ বাবদ ২ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলগুলো সুমিষ্ট হওয়ায় এবং বাজারে চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছি আমি। উপজেলার কৃষি অধিদপ্তরের ব্লক সুপারভাইজার রাশেদুন্নবী বলেন, শীতের সময় পাতা লাল হওয়া রোগ ছাড়া মাল্টার আর কোন বড় ধরনের কোন রোগ হয়না।

আরো পড়ুন:
নাটোরে আরো ১৬১ জন করোনায় আক্রান্ত, ৭জনের মৃত্যু
কোটচাঁদপুরে করোনার উপসর্গে ফার্মেসী ব্যবসায়ীর মৃত্যু

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার বলেন, মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এ এলাকায়। ধান উৎপাদনের চেয়ে মাল্টা চাষে দশগুণ বেশি লাভবান হতে পারবে এ অঞ্চলের কৃষক।

জুন ,৩০.২০২১ at ১২:১৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএম/এসআর