যশোরে এক মায়ের বিরুদ্ধে সদ্য ভুমিষ্ঠ সন্তান হত্যার অভিযোগ

যশোরে উম্মে সালমা মলি (১৯) নামে এক মায়ের বিরুদ্ধে সদ্য ভুমিষ্ঠ সন্তান হত্যার অভিযোগ করেছেন সন্তানের বাবা নাছির উদ্দিন রাব্বি (২৪)। রবিবার ভোর রাত আনুমানিক আড়াইটায় সন্তানের জন্ম হলেও স্বামী নাছির উদ্দিন রাব্বি‘র কাছে স্ত্রী উম্মে সালমা মলি সোমবার দুপুর ২ টায় মোবাইল ফোনে জানায়। এরপর বিকাল সাড়ে ৩ টায় আবারো ফোন কে স্বামী রাব্বিকে বাচ্চা মারা গেছে বলে জানানো হয়।

স্ত্রী উম্মে সালমা মলি যশোর শহরের ষষ্ঠিতলা পাড়ার এলাকার বসন্ত কুমার রোডের বাসিন্দা মো. খুরশিদ আনোয়ার ও বেবি আনোয়ারের মেয়ে। আর স্বামী নাছির উদ্দিন রাব্বি নাসিরুদ্দিন রাব্বি চৌগাছা উপজেলার বড় খানপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার রসূলের ছেলে। ছেলে যশোর শহরের থেকে লেখাপড়া করার সুবাধে মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

সূত্র জানায়, হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র ঘোরাঘুরি দেখে সন্দেহ হয় পুলিশসহ স্থানীয়দের। এসময় পুলিশ বাচ্চা শিশুর লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে রেখে স্বামী রাব্বীকে থানায় ডেকে নেন। বিস্তারিত জেনে লাশটি ময়নাতদন্তের পরামর্শ দেন থানা পুলিশ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক সূত্র জানায়, যশোর শহরে থাকা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্ক করে গত বছরের ১ জুলাই মোছা. উম্মে সালমা মলি ও নাসির উদ্দিন রাব্বি বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রী মলিকে নিয়ে রাব্বি তার নিজ বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার বড় খানপুর আসে।

উম্মে সালমা (মলি) মোবাইল ফোনে তার মা বেবি আনোয়ারকে জানিয়ে দেয় সে সেচ্ছায় নাসির উদ্দিন রাব্বি বিয়ে করে তাদের বাড়িতে আছেন এবং ভালো আছেন। কিন্তু মেয়ের মা বেবি আনোয়ারসহ অন্যান্যরা এ বিয়েতে দ্বিমত করে পরের দিন নাসির উদ্দিনের নিজ বাসায় আসে মেয়েকে জোর পূর্বক নিয়ে যেতে চাইলেও সে যেতে রাজি হয় না। কিছুদিন পর পর রাত নেই দিন নেই হুটহাট চলে আসে জামাই বাড়িতে এবং তাদের সাথে খুব খারাপ আচারণ করে।

এক পযার্য়ে মলির মা বেবি আনোয়ার যশোর কোতোয়ালি থানায় জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যশোর থানা থেকে তদন্ত করে ও মলি নিজের মুখে বলে আমি নিজের ইচ্ছায় এসেছি আমাকে জোর করে আনেনি। তারপর কিছু দিন সুখে সংসার করছিলো তার। এরই মধ্যে অন্তসত্ত্বা হয় মলি।

স্বামী নাসির উদ্দিন রাব্বি যশোরে একটা ছোট চাকরি শুরু করে। সে কারণে যশোর শহরের ধর্মতলায় একটি বাসা ভাড়া করে স্বামী স্ত্রী সুখে থাকেন। স্ত্রী মলিও বাবার বাড়িতে কম বেশি যাতায়াত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে যখন মলি ৭ মাসের অন্তসত্ত্বা তখন সংসার করবে না।

তারপর দুই পরিবার এক জায়গায় বসে একটা আপোষ নামার মাধ্যমে মলির পরিবারের কোন দাবিহীনভাবে স্থানীয়দের সমঝোতায় মলিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় দেয়া হয়। ওই অপোষ নামায় উল্লেখ ছিল, সন্তান প্রসব হলে স্বামী নাসির উদ্দিন রাব্বিকেকে জানানো হবে।

আরও পড়ুন:
দি ডেইলি সান পত্রিকার ডেপুটি ম্যানেজারের পিতা মাস্টার ইমামুল হোসেনের ইন্তেকাল
হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত গবেষণা

স্বামী রাব্বি জানায়, তার পরিবার নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্ত্রী মলি। তিনি চেষ্টা করেও তার গর্ভের সন্তানের খবর নিতে পারেনি। কিন্তু গত সোমবার (১৪ জুন) দুপুর আড়াইটায় স্ত্রী মলি ফোন করে জানায়, তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন রাত সোয়া ২ টায়। এসময় আরো বলে আপনি শহরের রাজ্জাক কলেজের সামনে আসেন বাচ্চা নিয়ে যান। কোন হসপিটাল এ হয়েছে সেটার নাম বলে না। প্রতি উত্তরে তিনি (রাব্বি) বলে আমার বাচ্চা কি রাজ্জাক কলেজের গেটে হয়েছে, ওখানে যাব কেন? কোন হাসপাতালে অথবা তোমাদের বাড়িতে যাব।

রাব্বি আরও জানায়, আবার ৪ টার দিকে ফোন করে বলে বাচ্চা মারা গেছে আপনারা এখনো আসেন নি কেন, যদি না আসেন থানার যাবো। পরে তারা থানায় গিয়ে জিডি করে, দেখতে আসেনি, বিভিন্ন মিথ্যা কথা বলে।

এসময় নাসির উদ্দিন দাবি করে পরিকল্পিত ভাবে তার সদ্য ভুমিষ্ঠ কন্যা সন্তানকে মেরে ফেলেছে তার স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীসহ তাদের পরিবার। এব্যাপারে তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন।

জুন, ১৫, ২০২১ at ১৫:০০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএমআই/তআ