আশঙ্কাজনকহারে খুলনা বিভাগে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণের হার : শীর্ষে খুলনা, নিম্নে মেহেরপুর

আশঙ্কাজনকহারে খুলনা বিভাগে ১০ জেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণের হার। এ বিভাগে প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবারে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয় তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভাগে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৭৮ জন, এদিন ৫ জনের মৃত্যুও হয়। ইতিমধ্যে খুলনা বিভাগে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, মৃত্যু হয়েছে ৬৯৫ জনের। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় এগিয়ে খুলনা, সর্বনিম্নে রয়েছে মেহেরপুর।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলার একজন, বাগেরহাটের দুজন ও কুষ্টিয়ার দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। এখানে ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে।

করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত খুলনা করোনা হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজন এবং উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১২৬ জন রোগী। যার মধ্যে ৫৫ জন আছেন রেড জোনে, ২৯ জন ইয়োলো জোনে।

তিনি জানান, আইসিইউতে ১২ জন এবং এইচডিইউতে ৩০ জন আছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন রোগী। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৭ জন।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, খুলনা জেলা ও মহানগরীতে নতুন করে ১২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ শনাক্ত হয়। খুলনায় মোট নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার ২৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনার রূপসা সেনের বাজারের আইচগাতী এলাকার শেখ আজগর আলী (৫২) নামের এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে খুলনায় মৃত্যু হয়েছে ১৯২ জনের।

এদিকে খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ৯০ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯৫-তে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩২ হাজার ৫৩২ জন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেলাভিত্তিক করোনা-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা য়ায়, বিভাগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনায় শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ১০১ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৫৩৬ জন।

আরও পড়ুন:
যশোরের শার্শায় অনলাইন ক্যাসিনোতে আসক্ত তরুণরা
আজ বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ
সেই দরবার শরীফ থেকে একজোড়া হরিণ উদ্ধার

বাগেরহাটে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৯১ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৬২ জন। সাতক্ষীরায় শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ১৫৭ জন এবং মারা গেছেন ৪৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৫২৫ জন।

চুয়াডাঙ্গায় শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ১৫৪ জন। মারা গেছেন ৬৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৩ জন। শনাক্তের দিক দিয়ে সর্বনিম্নে রয়েছে মেহেরপুর। এখানে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১১০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮৮০ জন।

ঝিনাইদহে শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩১ জন। মারা গেছেন ৫৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৯০ জন। কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৯৪ জন। মারা গেছেন ১২৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৭৬৬ জন।

যশোরে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৯৯ জন। মারা গেছেন ৮৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৬৬০ জন। নড়াইলে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৬১ জন। মারা গেছেন ২৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৪ জন। মাগুরায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৯২ জন। মারা গেছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২১৫ জন।

জুন, ১০, ২০২১ at ১৪:০৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসআর/তআ